ভারতের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের ১৬তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাঁওতাল আদিবাসী দ্রৌপদী মুর্মু।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ের জন্য দ্রৌপদীর প্রয়োজন ছিল পাঁচ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৬ ভোট। আর সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দ্রৌপদী ভোট পেয়েছেন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭টি ভোট। দ্রৌপদীর বিজয়ের খবরে বিজেপির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়েছে।

ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ পর পর দু’বার (১৯৫২ ও ১৯৫৭) সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। সেকারণে ১৬তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হলেও দ্রৌপদী দেশটির ১৫তম রাষ্ট্রপতি।

গত ১৮ জুলাই ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সদস্য এবং রাজ্যগুলোর সংসদ সদস্যরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় ভোটগণনা শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভুল ভাবে ব্যালট পেপারে দাগ দেওয়ার কারণে ১৫ সংসদ সদস্যের ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। প্রথম রাউন্ডে সংসদ সদস্যদের ভোটগণনা শেষে দ্রৌপদীর পক্ষে পড়ে ৫৪০টি ভোট। আর প্রতিদ্বন্দ্বী যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ২২৮টি ভোট। অর্থাৎ, ৭২ দশমিক ১৯ শতাংশ সংসদ সদস্যই দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছেন।

দ্রোপদীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসসহ ১৭টি বিরোধী দল সাবেক মন্ত্রী যশোবন্ত সিংকে প্রার্থী করেছিলেন।

আগামী ২৫ জুলাই বর্তমান প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের জায়গায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন মুর্মু।

মুর্মর নিজ শহরের বাসিন্দারা তার বিজয় উদযাপন করতে ২০ হাজার মিষ্টি তৈরি করেছেন। এ ছাড়া, একটি আদিবাসী নৃত্য ও বিজয় শোভাযাত্রারও পরিকল্পনা রয়েছে।

১৯৫৮ সালের ২০ জুন দ্রৌপদী মুর্মু ওড়িশা রাজ্যের ময়ুরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে সাঁওতাল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বিরঞ্চি নারায়ণ টুডু।

শৈশবকাল থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন তিনি। ভুবনেশ্বরের রামা দেবী মহিলা কলেজে মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করেন। তার দুইটি ছেলে ও একটি কন্যা ছিল। কিন্তু এক দুর্ঘটনায় স্বামী ও দুই ছেলেকে হারান তিনি।

নিজ রাজ্য থেকেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। প্রথমে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও বিজু জনতা দলের জোট সরকারের সময় দ্রৌপদী মুর্ম বাণিজ্য ও পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ সাল থেকে ২০০২ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আর ২০০০ এবং ২০০৪ সালে রায়রাংপুর বিধানসভার সদস্য ছিলেন।

ঝাড়খন্ডের প্রথম নারী রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ওড়িশার ইতিহাসে প্রথম নারী এবং আদিবাসী নেতা হিসেবে রাজ্যপাল নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আগামী ৬ আগস্ট দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী করেছে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক গভর্নর জগদীপ ধনকরকে। তার বিপরীতে লড়বেন কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধী দলগুলোর প্রার্থী মার্গারেট আলভা।

তবে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ‍ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস।

বৃহস্পতিবার মমতার আত্মীয় অভিজিৎ ব্যানার্জী জানান, জগদীপ বা মার্গারেট কাউকেই তাদের দল সমর্থন জানাবে না। এটি দলের সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া সিদ্ধান্ত।

শেয়ার করুন