‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পাচ্ছেন ২৮ কর্মকর্তা ও ৩ দপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
ফাইল ছবি

প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পাচ্ছেন প্রশাসনের ২৮ জন কর্মকর্তা ও ৩টি সরকারি দপ্তর। আগে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ‘জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হতো। এবার ‘জনপ্রশাসন পদক’ এর নাম বদলে নতুন আঙ্গিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানে কর্মকর্তাদের এ পদক দেওয়া হচ্ছে।

এরই মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্তদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মনোনীতদের তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীতদের হাতে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন।

এবার ‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’য় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পাচ্ছে।

‘মানব উন্নয়ন’ ক্ষেত্রে দলগতভাবে পদক পাচ্ছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বাগেরহাট মোল্লারহাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ওয়াহিদ হোসেন, মোল্লারহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মন্ডল ও মোল্লারহাটের উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. কামাল হোসেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব কাজী মো. আব্দুর রহমান (নেত্রকোণার সাবেক জেলা প্রশাসক), নেত্রকোণার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক (বর্তমানে পিআরএল ভোগরত), নেত্রকোণা খালিয়াজুরির উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, খালিয়াজুরির সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) (বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে যোগ দেওয়া) নাহিদ হাসান খান ও নেত্রকোণার মদনের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ ক্ষেত্রে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা’য় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এইচ এম আব্দুর রকিব, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাকিউল ইসলাম পদক পাচ্ছেন।

‘অপরাধ প্রতিরোধ’ ক্ষেত্রে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন, গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আজহারুল ইসলাম (মাদারীপুরের স্থানীয় সরকারের সাবেক উপ-পরিচালক), মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আবু-জাহের দলগত আবেদন ক্ষেত্রে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ ক্ষেত্রে দলগতভাবে মনোনীত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম ও সুরক্ষা ডেভেলপার ইউনিট।

‘সংস্কার’ ক্ষেত্রে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। ‘গবেষণা’য় পদক পাচ্ছেন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান ও ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পারভেজুর রহমান।

কুমিল্লার ডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফী, সহকারী কমিশনার ফাহিমা বিনতে আখতার ও নাসরিন সুলতানা নিপা ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ খাতে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের সৃজনশীল ও গঠনমূলক কার্যক্রম উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিতকরণ ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অধিকতর গতিশীল করতে সরকার ২০১৬ সালের ২৩ জুলাই প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক দেয়।

২৩ জুলাই জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপনের অংশ হিসেবে এই পদক দেওয়া হয়। পদক দিতে ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা ২০১৫ (২০১৬ সালে সংশোধিত)’ করা হয়। এ বছর সেই নীতিমালা বাতিল করে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ প্রণয়ন করা হয়।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রশাসন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, মানব উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা, অপরাধ প্রতিরোধ, জনসেবায় উদ্ভাবন, সংস্কার, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক দেওয়া হচ্ছে।

মনোনীতদের পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

ব্যক্তিগত অবদানের জন্য ২ লাখ টাকা, দলগত অবদানের জন্য ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ৫ জন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে এবং নগদ পুরস্কারের ৫ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা এবং এর আগে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি/দলের অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীরা নামের শেষে ‘পাবলিক অ্যাডমিস্ট্রেটিভ অ্যাওয়ার্ড’ এর সংক্ষিপ্তরূপ ‘পিএএ’ টাইটেল ব্যবহারের পরিবর্তে সরকারি আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে পোশাকের সঙ্গে সরকার অনুমোদিত বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকের মনোগ্রাম ব্যবহার করতে পারবেন বলে নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন