অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ চার হাজার ৫৮১ কোটি ডলার। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের মার্চ শেষে এ ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ২৩ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৩২৩ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় আট লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ সংখ্যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২১ শতাংশ।
বড় ঋণের বেশির ভাগই সরকারের নেওয়া ঋণ, যা শতকরা হিসাবে ৭৩ শতাংশ। আর এসময়ে বেসরকারি খাত ঋণ নিয়েছে ২৭ শতাংশ। বিপুল পরিমাণ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে সরকারি-বেসরকারি খাতে চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, আমদানি দায় পরিশোধের পাশাপাশি বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে দেশের ওপর চাপ বাড়বে। বর্তমান সংকট কাটাতে বিদেশি ঋণের প্রয়োজন। তবে সামাল দিতে না পারলে খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বিদেশি উৎস থেকে সরকারি-বেসরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৫৮১ কোটি ডলার। এরমধ্যে ৩৬ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ চার হাজার ৬৭৮ কোটি ডলার ছিল দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। আর স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৯ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার, যা মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বিদেশি ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের প্রবৃদ্ধি উচ্চহারে (১৯ শতাংশ) ছিল। ওই সময়ে মোট বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার বা আট হাজার ১৫৭ কোটি ডলার। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে (৯ মাসে) আরও ১১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন বা এক হাজার ১৬৬ কোটি ডলার বেড়েছে।
দেশে এখন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও বাড়ছে বিদেশি ঋণ। ২০১৭ সালের শেষে দেশের বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ২৮ বিলিয়ন বা এক হাজার ২২৮ কোটি ডলার।
বেসরকারি খাতে গত পাঁচ বছরে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেড়েছে করোনাকালীন সময়ে। এসময়ে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে, যার ৭০ ভাগই স্বল্পমেয়াদি।