জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
শনিবার (২৩ জুলাই) এক শোকবার্তায় তিনি অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ ও জনপ্রিয় সংসদ সদস্য। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদকে এবং গাইবান্ধাবাসী তাদের একজন আপন মানুষকে হারালো।
মোকতাদির চৌধুরী আরও বলেন, তিনি অত্যন্ত দক্ষ ও নিরপেক্ষভাবে সংসদ পরিচালনা করতেন। সংসদ পরিচালনায় তাঁর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশে তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
উল্লেখ্য, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ৪টার (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা) দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
১৯৪৬ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফজলে রাব্বী মিয়া। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করলে তার বিরোধিতার আন্দোলনে নেমে প্রথম আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
রাজনৈতিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা হিসেবে অংশ নেন প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়া।
তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদিয়ে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।
২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। দশম সংসদ থেকে তিনি আমৃত্যু ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২০ সালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সদ্য প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম মারা যান।