সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে ফুটপাতে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের তৈরি করা দুটি পুলিশ বক্স ভেঙে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বক্স দুটি ছিল রাজধানীর কলেজ গেট এলাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে।
আজ শনিবার দুপুরে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের নির্দেশে সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের আওতাধীন কলেজ গেট ট্রাফিক পুলিশের একটি পুরোনো পুলিশ বক্স ছিল।
এর পাশেই কংক্রিটের পিলার স্থাপন করে ইটের দেয়াল গেঁথে আরেকটি স্থায়ী পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হয়েছিল। অভিযানের সময় দুটি পুলিশ বক্সই ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুরো অভিযানে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে নেতৃত্ব দেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
অভিযান শুরুর আগে পুরোনো পুলিশ বক্সের ভেতর থেকে চেয়ার-টেবিল ও অন্যান্য আসবাব সরিয়ে নেন ওই স্থানের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। পুলিশ বক্স ভাঙার বিষয়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
পরে অবশ্য ফুটপাতে থাকা ট্রাফিক পুলিশের একটি ছাতার নিচে রাখা চেয়ার-টেবিলে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বসে ছিলেন।
পুলিশ বক্স ভাঙার বিষয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দেখে খুবই আশ্চর্য লেগেছে, খুব খারাপও লেগেছে। আমাদের ১৮ ফুট চওড়া ফুটপাতটিকে কীভাবে স্থায়ী পুলিশ বক্স করা হয়েছে!
মেয়র বলেন, পিলার ও দেয়াল দিয়ে ফুটপাত পুরো দখল করে পুলিশ বক্স হবে, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। অবশ্যই পুলিশদের জন্য জায়গা লাগবে। তবে আলোচনার ভিত্তিতে কাজগুলো করা যায়।
মেয়র আরও বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করে। বিশেষ করে হাসপাতালের অনেক রোগী হুইলচেয়ারে করে যায়। এসব বিষয় চিন্তা করে এই এলাকায় ফুটপাত চওড়া করে বানানো হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা আসুন, আলোচনা করুন। দরকার হলে আমরা সরকারকে বলব পুলিশ বক্সের জন্য জায়গা দিতে। কিন্তু এভাবে পুরো ফুটপাত দখল করে পুলিশ বক্স করা হবে, তা কাম্য নয়। জনগণ যাতে দুর্ভোগ না পোহায় এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে।
সিটি করপোরেশনের জায়গায় কোনো স্থাপনা করতে চাইলে সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়েই করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পুলিশ বক্স ভেঙে ফেলার ঘটনাটি শুনেছেন জানিয়ে ঢাকা মহানগর ট্রাফিকের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার সাহেদ আল মাসুদ বলেন, সারা বাংলাদেশে সব ট্রাফিক স্থাপনাই রাস্তার ওপরে। কর্মকর্তাদের বসার একটি জায়গাও সরকারিভাবে নেই। এভাবেই মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হয়।
সাহেদ আল মাসুদ আরও বলেন, এটা কেন ভাঙল, সে বিষয়ে আগে থেকে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে তাদের অনুরোধ করতে পারি, এর বেশি তো কিছু করতে পারি না। তার ভাষ্য, ‘কাজের স্বার্থেই, জনগণের স্বার্থেই এটা করতে হয়।’