প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেছেন, কূটনীতিকরা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এলেও নির্বাচন বিষয়ে কোনও পরামর্শ দেয়নি। তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে তারা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে কিন্তু তারা আমাদের কোনও পরামর্শ দেননি।’
রোববার (২৪ জুলাই) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সঙ্গে সংলাপের সময় এ কথা বলেন।
এর আগে জাসদের নেতারা তাদের প্রস্তাবে ‘কতিপয় বিদেশি কূটনৈতিক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাজে কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী এবং অযাচিতভাবে নাক গলিয়েছে’ বলে অভিযোগ তোলেন। নির্বাচন কমিশনকে এ ধরনের ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী অযাচিত নাক গলানোকে’ প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তারা।
জবাবে সিইসি বলেন, ডিপলোম্যাটদের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। একটি গ্রুপ এখানে এসেছে, এছাড়াও পরে দুজন এসেছেন। তারা কিন্তু নির্বাচনের বিষয়ে কোনও পরামর্শ দেননি। বাইর থেকে মনে হতে পারে..। একটা বড় গ্রুপ এসেছিল, তারা আমাদের নির্বাচন বিষয়ে শুধু অবহিত হয়েছেন। কিন্তু উনারা উনাদের পক্ষ থেকে কোনও পরামর্শ দেননি। আপনাদের (জাসদ) হয়তো দেখা হলে দিতে পারেন। কিন্তু আমাদের ওইভাবে কোনও পরামর্শ দেননি। আজ যতটুকু শুনেছি, এটা আগে থেকে একটি ধারাবাহিকতা। যখন নির্বাচন আসে তখন বিভিন্ন লোক এসে সাক্ষাৎ করে যায়। তারই অংশ হিসেবে হয়তো এটা হয়েছে।’
রাজনৈতিক বিষয়ে ইসিকে সালিশি না করার বিষয়ে জাসদের প্রস্তাবের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলেছি, সবাইকে আহ্বান করে যাবো। কিন্তু আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি কাউকে নির্বাচনে আসতে আমরা বাধ্য করতে পারবো না। এটা আমাদের দায়িত্বও নয়। আমাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবাইকে আহ্বান করা।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অনেক দায়িত্ব কমে যায়। অনেকগুলো দল থেকে একই মঞ্চ থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। বিদেশে এ ধরনের বিষয়টি দেখা যায়। এই প্রস্তাবটি আমার কাছে ভালো লেগেছে। অবশ্য আইনে এই বিষয়টি নেই।’
নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনে নির্বাচন কমিশন কোনও ঘাটতি দেখছে না উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আমাদের পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে। তারপরও কোনও ফাঁক-ফোকড় থাকলে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এছাড়াও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা রয়েছে। আমাদের ক্ষমতার খুব একটা অভাব আছে, সেটা ফিল করছি না। সকলের সহযোগিতায় ক্ষমতাগুলো আইনানুগভাবে প্রয়োগ করতে পারি। আপনারা আইনের প্রয়োগে সহযোগিতা না করে বিরুদ্ধাচরণ করলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। আমরা আরোপিত ক্ষমতাগুলো ব্যবহার করতে চাই। আমরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান কঠোরভাবে প্রয়োগ করবো।’
সিইসি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশে লেভেল প্লেয়েইং ফিল্ডটা…। কেউ একটু বাড়তি সুবিধা ভোগ করেন। কেউ একটু কম বা কোনও দিক থেকে আমরা হয়তো পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়ি। কোনও দিক থেকে আমরা পক্ষপাত দুষ্ট নই, বরং নিপীড়নমূলক হয়ে পড়ি। অথবা ফিল্ড লেবেলে যে বিষয়টি সহায়ক হওয়া দরকার সেটা সেইভাবে আসছে না।’