বাংলাদেশের উন্নয়নে শিনজো আবের অবদানের কথা স্মরণ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন। শিনজো আবের মৃত্যুতে আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্বকালে বলেন, জাপানের উন্নয়ন পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশের উন্নয়নে তিনি (শিনজো আবে) সবসময় পাশে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প, যেমন মাতারবাড়ি পাওয়ার প্লান্ট এবং গভীর সমুদ্র বন্দর, মেট্রোরেল এবং ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে শিনজো আবের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি (আবে) পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং রূপসা সেতু নির্মাণেও বাংলাদেশকে সহায়তা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হলি আর্টিজানে হামলার ফলে জাপান ও ইতালীয় নাগরিকদের মৃত্যুর পর জাপান সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত মেট্রোরেল অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর কাজ অব্যাহত রাখতে আবে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় অনেকের ধারণা ছিল, জাপান যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সময় আবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন যে, বাংলাদেশের প্রয়োজনে তিনি সবসময় পাশে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসী হামলার পর অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে সক্ষম হয়। আবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করেছেন এবং তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেতে সহায়তা করেছেন। কাজেই, বাংলাদেশের আজকের উন্নয়নে তাঁর (শিনজো আবে) একটি মহান ভূমিকা রয়েছে। আমরা তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত এবং মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিনজো আবোর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একদিনের শোক দিবসও পালন করেছে। এটি সত্যিই একটি দুঃখের দিন, কারণ, জাপানের মতো একটি জায়গায় এমন জঘন্য কাজ হয়েছে। আমরা জানি না, তাঁর হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে কিনা। জাপানের মতো দেশে এমন জঘন্য কাজ হতে পারে, তা তারা ভাবতেও পারেননি।

তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারিনি কেন তাঁর মতো একজন ব্যক্তির ওপর হামলা চালানো হল। তিনি একজন ভালো মানুষ, সংবেদনশীল, দেশপ্রেমিক এবং সত্যিকারের রাজনীতিবিদ ছিলেন। জাপান সরকার (এবং কিছু উন্নয়ন অংশীদার) ও যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে সহায়তা করেছিল। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে প্রথম জাপান সফরে মুক্তিযুদ্ধের পর তাদের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছিলেন, সেতু নির্মাণে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপানের প্রতিটি সরকারই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।

শেয়ার করুন