গত সোমবার মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সাবেক এক এমপিসহ চারজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করে। অনেক বছর ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির না থাকলেও চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের মধ্য দিয়ে কয়েক দশক পর সেই দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া আবার ফিরে এলো। জান্তা সরকার বলেছে, কারা প্রথা অনুযায়ী এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে কোথায় এ দণ্ড কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
জানা গেছে, গত বছর এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে বিরোধীদের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালানো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিলিশিয়াদের লড়াইয়ে সহায়তা করার দায়ে ওই চার জনকে অভিযুক্ত করা হয় এবং জানুয়ারিতে রুদ্ধদ্বার বিচারে তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যেভাবে রাজনীতিবিদদের ধরে ফাঁসি দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে মানবাধিকারের প্রতি দেশটিতে শাসকদের ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই। নিজ দেশের জনগণের প্রতি এ ধরনের বর্বর ও অমানবিক আচরণ আমাদেরকে হতবাক করেছে। আমরা মনে করি, দেশটির জান্তা সরকার জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কথায়ও বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি।
মিয়ানমার জান্তার এই পদক্ষেপ অবশ্যই গভীর উদ্বেগের বিষয়; এ ঘটনায় মিয়ানমারে জাতীয় ভাবাবেগ এবং সংঘাত মাথা চাড়া দিয়ে ওঠতে পারে বলেও ধারণা করা যায়। তাছাড়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ ঘটনা মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। আমরা জান্তা সরকারকে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করার, অন্যায়ভাবে আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার এবং মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানাই।