পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা। প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু হয়ে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) মোংলা বন্দর থেকে পোল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ মার্কস নেসনা।
জাহাজটিতে ঢাকার ২৭টি ফ্যাক্টরির মিশুদের পোশাক, জার্সি, কার্ডিগান, টি-শার্ট, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস পণ্য পাঠানো হচ্ছে পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে। এর আগে ২৫ জুলাই বন্দর জেটিতে আসে বিদেশি জাহাজটি।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে সড়ক পথে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে। যেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার, সেখানে বর্তমানে মোংলার দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। জাহাজ হ্যান্ডলিং দ্রুত ও নিরাপদ হওয়ায় এবং ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমায় ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
মোংলা বন্দর ব্যবহার করে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির বিষয়টি বন্দরের জন্য নতুন এক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্টরা।
সিঅ্যান্ডএফ ও শিপিং এজেন্ট সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, চট্টগ্রামে জাহাজের চাপের কারণে অনেক সময় পণ্য খালাস বা বোঝাইয়ে সময়ক্ষেপণ হয়। তবে মোংলা বন্দরে সেই চাপ নেই। এই গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির পর আরও অনেকে এই বন্দর দিয়ে রপ্তানিতে আগ্রহী হবেন।
মোংলা বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দর দিয়ে প্রথমবার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর আগে হাতে গোনা কয়েক বার অল্প কিছু গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে মোংলা দিয়ে। এই রপ্তানির মাধ্যমে একটা নতুন যাত্রা শুরু হলো।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে জাহাজের এই যাত্রা মোংলা বন্দরের জন্য একটি নতুন মাইল ফলক। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সড়ক পথে ঢাকা থেকে মোংলা বন্দর হয়ে প্রথম গার্মেন্টস পন্য রপ্তানি হচ্ছে। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ১৭টি কনটেইনারে গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে জাহাজটি পোল্যান্ড যাবে। ভবিষ্যতে আমদানি-রপ্তানির এই ধারা আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কয়েক বছরে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া বর্তমানে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ৮ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।