অর্থনৈতিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা বাংলাদেশেরও হতে পারে বলে যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে তার বিপরীতে আশার বাণী শোনাল বিশ্বের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস।
বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং ভবিষ্যতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সংস্থা বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কার মতো সংকটের ঝুঁকি কম।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ধকলে থাকা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে আরও শ্লথ করেছে ছয় মাস ধরে ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট।
এমন বাস্তবতায় আর্থিক সংকটের মধ্যে থাকা দক্ষিণ এশীয় দেশ শ্রীলঙ্কা এরইমধ্যে দেউলিয়া হয়েছে। এই অঞ্চলের আরেক দেশ পাকিস্তানেও সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বাংলাদেশেও এমন ঝুঁকির কথা বলছেন।
তবে বাংলাদেশের তেমন ঝুঁকি কম বলেই মনে করছেন মুডিসের সিঙ্গাপুর শাখার রাষ্ট্রীয় (বিনিয়োগ) বিশ্লেষক ক্যামিলে শ্যঁতা। তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্প্রতি উচ্চ স্তর থেকে নেমে এলেও বাহ্যিক দুর্বলতার সূচকে বাংলাদেশ অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত।’
আমদানি ব্যয় বেড়ে চলার মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস এবং সংকট কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল—আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বুধবার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ঋণ চাইলেও দেশে অর্থনৈতিক সংকটের মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।’
ব্যয় সাশ্রয়ে এরইমধ্যে সরকার একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে রেশনিং করার পাশাপাশি কৃচ্ছ্রতা সাধনে মন্ত্রিসভার সদস্য, আমলাতন্ত্রসহ দেশের সকলের প্রতি অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুডিসের বিশেষজ্ঞ ক্যামিলে শ্যঁতার অনুমান, ‘রেমিট্যান্সের পরিমাণ ও রপ্তানি চাহিদা কম থাকার পাশাপাশি খাদ্য ও জ্বালানির চড়া দামের কারণে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতির আরও অবনতি হতে পারে। কারণ বাংলাদেশে একদিকে এসব চাপ তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বন্যাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে দেশটি।’