একটি হত্যা মামলায় সাত বছর আগে তাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন আদালত। এরপর থেকেই তিনি লাপাত্তা। অবশেষে র্যাবের হাতে ধরা পড়লেন নজরুল ইসলাম (৪২) নামের ওই আসামি। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কামারঘোনা গ্রামে। গতকাল শনিবার রাতে ঢাকার সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৪–এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্প। র্যাব বলছে, আদালতের রায়ের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে নজরুল ছদ্মবেশে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। ঘন ঘন পেশা পরিবর্তন করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৫ সালে উপজেলার কদমতলা গ্রামের ইদ্রিস আলী পাশের মানিকনগর গ্রামের সেলিনা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। ওই দম্পতির বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে সেলিনার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন আবদুস সাত্তার নামের এক ব্যক্তি।
একপর্যায়ে সেলিনাকে দিয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করান সাত্তার। অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দিলে স্বামী ইদ্রিসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সেলিনা। ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে সাত্তার, দুলাল, নজরুল ও সেলিনা মিলে ইদ্রিসকে গলা কেটে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় নিহত ইদ্রিসের মা কোমেলা বেগম ওই চারজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ৩৮ মাস কারাভোগের পর নজরুল জামিনে বের হন। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামি নজরুল ও সেলিনাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। আসামি দুলালকে খালাস দেওয়া হয়। আর আসামি সাত্তার বিচারকাজ চলাকালে মারা যান।
র্যাব-৪–এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নজরুল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেড়াতেন। কখনো রিকশা, কখনো ভ্যান চালাতেন।
এ ছাড়া কাঁচা মালামাল ফেরি করতেন। গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে র্যাবের মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল গতকাল রাতে সাভারের জয়নাবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে নজরুলকে হরিরামপুর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।