জুলাইয়ে দেশে এলো রেকর্ড ২.০৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠালেই মিলবে প্রণোদনা
ফাইল ছবি

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। মাস শেষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন বা ২০৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় যা (এক ডলার সমান ৯৪ দশমিক ৭০ টাকা ধরে) ১৯ হাজার ৭৯২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা আগের অর্থবছরের (২০২১-২০২২) একই মাসের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই মাসে এসেছিল ১৮৭ কোটি ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিয়ে আসছে। এতে আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাচ্ছে প্রবাসীরা। এ কারণে অর্থবছরের প্রথম মাসেই রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা। এছাড়া ঈদের মাস হওয়ায় এ মাসে তুলনামূলক বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, নতুন অর্থবছরের জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ডলার এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের শেষ মাস অর্থাৎ জুলাই এর আগের মাস জুনে এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে হিসাবে জুন অপেক্ষা জুলাই মাসে ২৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।

২০২১ সালের জুলাইয়ে ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা তার আগের মাস জুনের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। ওই মাসে ১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। আর ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।

তবে, সামগ্রিকভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের নেতিবাচক অবস্থা চলে আসে রেমিট্যান্স। যা চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে আশার সঞ্চালন করে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার। এ উল্লেখযোগ্য অর্থ নেতিবাচক সময়ে আশার সঞ্চালন বলছেন ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। তার আগের অর্থবছরে (২০২০-২০২১) এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের মধ্যে ডলার সংকট চলছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যেখানে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন হয় এমন সব প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম যাচ্ছে। হুন্ডি বা অন্য কোনো ব্যবস্থায় ডলার কেনা-বেচা করছে কি না দেখবে পরিদর্শন টিম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারে অনিয়ম পেলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। এর আগেও আমরা ১০ টি টিম মার্কেটে পাঠিয়েছি। আভিযানিক এ টিম ডলার মার্কেটে কিছু তথ্য পেয়েছে যা রুলস রেগুলেশন কাভার করে না। লাইসেন্স নেই এমন প্রতিষ্ঠানও ডলার কেনা-বেচনার সঙ্গে জড়িত, এমন তথ্যও এসেছে। আবার একটি লাইসেন্স নিয়ে দুটি শাখায় ব্যবসা করছে। এমনটি যারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

গত জুলাই ১৭ অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা জমা আকৃষ্ট করার জন্য ইউরো কারেন্সি রেট প্রত্যাহার করে সার্কুলার জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে বাড়ছে ডলারের দাম। ব্যাংকগুলোতে এখন আমদানির জন্য ১০০ টাকার নিচে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। রেমিট্যান্সের জন্যও সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। আর খোলাবাজারে দর বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন