সদ্য শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেড়েছে। এক বছরে রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেশি হয়েছে ৩ হাজার ৩২৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে প্রায় ৯১৪ কোটি ডলার বেশি এবং এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা ধরে) এ ঘাটতির পরিমাণ তিন লাখ ১৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। গত অর্থবছর দুই হাজার ৩৭৭ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল।
সোমবার (১ আগস্ট) ২০২১-২২ অর্থবছরের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানিতে জোয়ার বইছে। আর এতে আমদানি-রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমদানির লাগাম টেনে ধরা। এটা করতে না পারলে সংকটে পড়বে অর্থনীতি।
চলতি হিসাব ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বিদায়ী অর্থবছরের ঘাটতির (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৬৯ কোটি ডলার। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৪৫৭ কোটি ডলার।
এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরের সামগ্রিক লেনদেনে (ওভার অল ব্যালেন্স) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩৮ কোটি ডলার। অথচ ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৯২৭ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছর দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এটি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসেছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে চার হাজার ৯২৪ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। একই সময় আমদানি ব্যয় হয়েছে আট হাজার ২৪৯ কোটি ডলার। আমদানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি বৃদ্ধির হার বেশি হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে।
আলোচিত সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৯৯৮ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার। সেবা খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৮৭ কোটি ডলার। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৩০২ কোটি ডলার।