‘বিদেশে গবেষণা শেষে দেশে খোলেন মাদকের ল্যাব, লক্ষ্য ছিল রপ্তানি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা শেষে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে পড়াশোনার সময় পরিচিত হন নতুন ধরনের মাদকের সঙ্গে। এরপর মাদকের ওপর গবেষণা শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে এসে মাদক উৎপাদনে খোলেন গবেষণাগার। এমনকি বিদেশে ভ্রমণের আড়ালে আবার পার্সেলের মাধ্যমে আমদানি করতেন নতুন ধরনের মাদক। এই মাদকের অর্থ পরিশোধ করা হতো হুন্ডির মাধ্যমে। আমদানি করা মাদক বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন পার্টিতে সরবরাহ করতেন তিনি। তার নাম ওনাইসী সাঈদ।

র‍্যাব বলছে, নতুন নতুন মাদক কীভাবে উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি ও বাজারজাত করা যায় তা নিয়ে বিস্তর অধ্যয়ন করতেন ওনাইসী সাঈদ। এ লক্ষ্যে তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে নতুন ধরনের মাদক কুশ (সিনথেটিক মারিজুয়ানা) তৈরির ল্যাব ও প্ল্যান্ট স্থাপন করেছিলেন।

universel cardiac hospital

এক্সট্যাসি নামক একটি নতুন মাদকের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পেরে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে ওনাইসী সাঈদ নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে র‍্যাবের একটি দল। এ সময় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম অপ্রচলিত মাদক এক্সট্যাসি (মলি নামেও পরিচিত), কুশ, হেম্প, এডারল, ফেন্টানিলসহ বেশ কয়েক ধরনের মাদক উদ্ধার এবং প্রায় ৩ কোটি টাকা সমমূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। এক্সট্যাসি হলো ৩,৪-মিথিলিন ডাই অক্সি মেথাফেটামাইন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খোন্দকার আল মঈন।

খোন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রচলিত নয়; কিন্তু বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রচলিত এমন কিছু মাদকের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতে আমাদের যুবসমাজ আসক্ত হয়ে উঠছে। তার প্রমাণ এই নতুন মাদকের সন্ধান। র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১-এর অভিযানে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ওনাইসী সাঈদকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, দশমিক ০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিচ এক্সট্যাসি বড়ি, ২৮ পিচ এডারল ট্যাবলেট এবং ২ কোটি ৪০ লাখ নগদ টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

পরে ওনাইসী সাঈদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের (গ্রিন হাউসের মতো) মাধ্যমে অভিনব পন্থায় কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওনাইসী সাঈদ তার মাদক কারবার সংশ্লিষ্টতার নানা তথ্য দিয়েছেন।

শেয়ার করুন