বাংলাদেশের একটি চিঠির ভিত্তিতে সাড়ে ৪ বিলিয়ন (৪৫০ কোটি) মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, আইএমএফ বলছে, বাংলাদেশকে তারা সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার দেবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কোনো দরকার নেই। কিন্তু আমরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য… ব্রাজিলের মতো উন্নত দেশ, ভারতও আইএমএফ’র টাকা নিচ্ছে। এমনকি ইংল্যান্ডও নিতে পারে। বিশ্ব ব্যাংক একটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, পৃথিবীর সব দেশ তাদের কাছ থেকে সহায়তা নিতে পারে।
‘আমরা চেয়েছি…তাড়াতাড়ি কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া, কি করে আইএমএফ সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশকে তারাই…দেবে। পাকিস্তানের কতদিন লেগেছে তাদের সঙ্গে নেগোশিয়েট করতে। তারা জানে পাকিস্তান এটা (ঋণ) ফেরত দিতে পারবে না। শ্রীলঙ্কা ফেরত দিতে পারবে না। শ্রীলঙ্কাকে (ঋণ) দেবে কি দেবে না এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি আইএমএফ।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি চিঠি পাঠিয়েছে, সেই চিঠির ভিত্তিতে (আইএমএফ) গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে বাংলাদেশকে (ঋণ) দেবে। কাজেই সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি অনেক মজবুত।
এর আগে আইএমএফের কাছে বাংলাদেশ সরকারের ঋণ চাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয় যে, অর্থনীতির চলমান পরিস্থিতি সামাল দিতে আইএমএফের কাছ থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নিতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য চিঠি দিয়েছে সরকার।
কিন্তু ২০ জুলাই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আইএমএফের কাছে কোনো অর্থ সহায়তা চায়নি। আইএমএফও বাংলাদেশের কাছে এ ধরনের প্রস্তাব করেনি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের আইএমএফের সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।
সবশেষ বুধবার (৩ আগস্ট) এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা তো আপনাদের কাছে সম্পর্কিত, অন্যরকম আইএমএফ আছে কি না জানি না। একটা আইএমএফ আছে তারা তো এ ধরনের কোনো প্রশ্ন আমাদের কাছে উপস্থাপন করেনি। আপনারাই পত্রিকায় লিখছেন, এটা নিয়ে আমি জবাব দেবো না। এটা কেন আপনারা বলছেন আমি জানি না।
বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ নিয়ে বক্তব্যও দিয়েছে। তাদের সমালোচনা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখন বাংলাদেশের কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কিংবা কিছু অতি উৎসাহী মিডিয়া আছে- তারা বলছে বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বানিয়ে দাও। শ্রীলঙ্কা বানালে খুশি হবে এই ধরনের মানুষও বাংলাদেশে আছে। তারাই বলছে বাংলাদেশে হাহাকার হবে, দুর্ভিক্ষ হবে। এ ধরনের কথা বলার মতো মানুষ বাংলাদেশে প্রচুর রয়েছে।