দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী দরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত; যাদের রুটিরুজির পরিমাণ সীমিত। আর এমন বাস্তবতায় মধ্যরাতে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় (সরকারের ভাষায় যেটি ভর্তুকি প্রত্যাহার) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু সবধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে, যাতায়াত খরচ বাড়বে। ফলে ধনী ও গরীবের মধ্যে চলমান বৈষম্য আরও বাড়বে।
প্রশ্ন হলো যাদের মাসিক আয় মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা, তারা কি বর্তমান বাস্তবতায় প্রতি মাসে বাসা ভাড়া পরিশোধ করে ৩/৪ সদস্যের পরিবার নিয়ে রাজধানী কিংবা এর আশেপাশের কোথাও কিংবা শহরাঞ্চলে জীবনযাপন করতে পারবে? গ্রামে যারা দিন এনে দিন খায় তাদের কী হবে? নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা কি সংসার খরচ মেটানোর পর তাদের সন্তানদের শিক্ষা ব্যয় বহন করতে পারবেন?। আমরা মনে করি, পারবেন না। পারার কথা নয়। কারণ সরকারের এই ঘোষণায় তো সাধারণ মানুষের ব্যয়ের সমান্তরালে আয় বেড়ে যাবে না।
প্রত্যেক দেশের সরকার মূলত দেশের জনগণের মধ্যে শ্রেণিবৈষম্য দূর করার স্বার্থে বিশেষ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা কিংবা ভর্তুকি প্রদান করে থাকে, যাতে সীমিত আয়ের মানুষেরা পরিবার নিয়ে অন্তত টিকে থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ী অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতিকে এখন খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়েছেন, যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই বাস্তবতা। মনে রাখতে হবে, বিশেষ পণ্যে ভর্তুকি পাওয়া জনগণের অধিকার, এটি ভিক্ষা কিংবা অনুকম্পা নয়। কাজেই আমরা আশা করব, দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে জ্বালানি তেলসহ জনসম্পৃক্ত পণ্যে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করবে।
লেখক: সিনিয়র সাব-এডিটর, মত ও পথ।