মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনগুলো শতভাগ কার্যকর নয় বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আর এ কারণে মানুষকে অবশ্যই তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১৭ আগস্ট) ডব্লিউএইচও’র মাঙ্কিপক্স ভাইরাসবিষয়ক টেকিনিক্যাল প্রধান রোসামুন্ড লুইস একথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ৯২টিরও বেশি দেশে ৩৫ হাজার মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ইউরোপ এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা। এছাড়া ভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সাথে যুক্ত ১২ জন মারা গেছেন।
বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রোসামুন্ড লুইস বলেন, মাঙ্কিপক্স ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য (অনুমোদন পাওয়া) ভ্যাকসিনগুলোর ‘১০০ শতাংশ কার্যকারিতা আশা করছে না’ ডব্লিউএইচও।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে সঠিক তথ্য নেই… এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মাঙ্গিপক্স মোকাবিলায় ভ্যাকসিন কোনো একক ঔষধ বা জাদুমন্ত্র নয়। যেসব ব্যক্তি যে মনে করেন যে, তারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন এবং সেই ঝুঁকি কমাতে চাইলে বেশ কিছু পথ রয়েছে। এর মধ্যে টিকাদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকলেও যেসব কর্মকাণ্ডে ঝুঁকি বাড়তে পারে সেসব কাজ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে।’
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
ডব্লিউএইচও প্রধান আরও বলেছেন, এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হওয়া বেশিরভাগ রোগীই ইউরোপ এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের বাসিন্দা। এছাড়া এই ভাইরাসে এমন সব পুরুষরা আক্রান্ত হচ্ছে যারা অন্য পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলছেন, ‘বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের ৯২টি দেশ ও অঞ্চল থেকে এসব রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ মাঙ্কিপক্স রোগী। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।’
এর আগে সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্সকে গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি বা বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসাবে ঘোষণা করে। গত ২৭ জুলাই গেব্রেইয়েসুস সাংবাদিকদের বলেন, মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাব কমানো যায়। তবে সবচেয়ে ভাল পন্থা হল ঝুঁকির রাস্তা থেকে সরে আসা।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ‘নিজের জন্য ও অপরের জন্য নিরাপত্তা রাখা ও নিজের সেক্স পার্টনারের সংখ্যা কমানো’ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই বার্তা সেইসব পুরুষদের জন্য ‘যারা পুরুষসঙ্গীদের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন।’
ডব্লিউএইচও’র প্রধান সেসময় আরও বলেন, ‘যদি আমরা (যৌনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে) আর একটু সংযমী ও সচেতন হই, সেক্ষেত্রে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব। এই রোগ থেকে আত্মরক্ষা অনেকটাই নির্ভর করছে নিজের ওপর।’