স্ত্রীকে অন্য নারীর সঙ্গে তুলনা করা এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী জীবনসঙ্গী হতে না পারায় কটাক্ষ করাকে স্বামীর মানসিক নির্যাতনের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন ভারতের একটি রাজ্যের আদালত। ভারতের কেরালা রাজ্যের হাইকোর্ট বলেছেন, একজন নারী এ ধরনের আচরণ সহ্য করবেন বলে আশা করা যায় না।
স্ত্রীর কাছ থেকে প্রায় ১৩ বছর আলাদা থাকার পর পারিবারিক আদালতের দেওয়া বিচ্ছেদের আদেশের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির করা আবেদন খারিজ করে আদালত এ রুল জারি করেছেন।
পরিপূর্ণ বৈবাহিক জীবন না থাকার কারণে ওই দম্পতিকে বিচ্ছেদের আদেশ দিয়েছিলেন পারিবারিক আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন স্বামী। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল কে নরেন্দ্রন এবং সিএস সুধার বেঞ্চ বলেছেন, স্বামী মানসিকভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করায় বিচ্ছেদ আইন ১৮৬৯ অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্ত্রী হিসেবে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় বাদীকে অনবরত কটাক্ষ করতেন তার স্বামী। অন্য নারীদের সঙ্গে তার তুলনা করতেন। এটি নিশ্চিতভাবে মানসিক নির্যাতন, যা কোনো স্ত্রী মেনে নিতে পারেন না।
ওই ব্যক্তির স্ত্রী, শাশুড়ির আবেদন, জবানবন্দি ও উপস্থাপিত প্রমাণ যাচাই–বাছাই করে আদালত এ রায় দেন। স্ত্রীকে ওই ব্যক্তির পাঠানো একটি ই–মেইল আদালতে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। সেখানে ওই ব্যক্তি কেমন জীবনসঙ্গী প্রত্যাশা করেন, তা স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। দাম্পত্য জীবনে কেমন আচরণ করতে হবে, তা নিয়ে ওই ই–মেইলে স্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, স্ত্রীকে শারীরিকভাবে আকর্ষণীয় মনে করতেন না ওই স্বামী। এ জন্য তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াননি।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে তাদের বিয়ে হয় এবং একই বছরের নভেম্বরে বিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দম্পতি বড় জোর এক মাস একসঙ্গে ছিলেন। এরপর তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন।