বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু তাঁর জায়গা থেকে সরে আসেননি। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই বক্তব্য তিনি আবারও নিশ্চিত করেছেন। সুতরাং বলতে হবে, যারা অন্যের আনুকূল্যে টিকে থাকে, তাদের এই দেশের সরকারে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই।
আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি–সমর্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইউট্যাব) মানববন্ধনে বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা নিহতের প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন হয়।
আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, এর প্রমাণ তারা একে একে দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। নিজেদের স্বাধীন বলে গর্ববোধ করছে। তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকারকে বলেন, আমাদের সাহায্য করবেন শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য। অর্থাৎ তারা এ কথা বলতে চায়, ভারত সরকারের আনুকূল্যে এই সরকার টিকে আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, বর্গিদের ভূমিকা পালন করেছে, দেশের মানুষের সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে।
টক শো আলোচকদের একটি অংশের সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী শিক্ষক, কিছু বুদ্ধিজীবী- এরা এবং তারা যখন টক শোতে কথা বলেন, তখন মনে হয় মোমেন সাহেব (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) বলেছেন, বেহেশতে আছি এটা অমূলক কোনো কথা নয়। তারা প্রমাণ করতে চান, আসলেও মানুষ বেহেশতে আছে।
নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে উঠে আসা ‘আয়নাঘর’ নিয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সেখানে আমাদের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। মাসের পর মাস সেখানে রাখা হয়। তারপর কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়। কাউকে কাউকে বছরের পর বছর রেখে দেওয়া হয়। যারা সেখান থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেরিয়ে আসছেন, তারা এখন স্টেটমেন্টগুলো দিচ্ছেন।
ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুতফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক আবুল হাশেম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদুল হাসান (মুক্তা), অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শের মাহমুদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক (সৈকত), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ বক্তব্য দেন।