গ্রেনেড হামলার মামলা : প্রস্তুত পেপারবুক, বেঞ্চ গঠন হলেই শুরু আপিল শুনানি

ডেস্ক রিপোর্ট

২১ আগস্ট মামলা
ফাইল ছবি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। মুহুর্মুহু গ্রেনেডের বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। সেদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মানুষের আর্তনাদ আর কাতর ছোটাছুটিতে তৈরি হয় এক বিভীষিকা। মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে পড়ে ওই হামলায়। আজ সেই নৃশংসতার ১৮ বছর।

রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় দুটি মামলা করে। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে। ২০০৮ সালের ১১ জুন মামলা দুটির অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় পুলিশ। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক (নিম্ন) আদালতের রায়ের পর হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। আপিল আবেদন ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির জন্য প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে মামলাটি দেশের উচ্চ আদালতে অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থাৎ ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া এখন দ্বিতীয় ধাপে।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে হাইকোর্টে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক মামলার নিষ্পত্তি ঝুলে আছে। এরমধ্যে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাটি অন্যতম। তবে এ মামলার আপিলের বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানির জন্য পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়েছে। এ পেপারবুক যাচাই-বাছাইয়ের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর শুনানির জন্য হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণের পালা। তারপর আলোচিত এ মামলার নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর শুনানি শুরু হবে।

নিয়ম অনুযায়ী, দেশের প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। বেঞ্চ ঠিক হলেই শুনানির জন্য আদালতে গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন বা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মুহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন।

প্রস্তুত ১০৮০ পৃষ্ঠার পেপারবুক

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য এক হাজার ৮০টি পেপারবুক তৈরি করা হয়েছে, যা প্রায় সাড়ে ২০ হাজার পৃষ্ঠার। মামলার রায়ের কপি, এফআইআরসহ যাবতীয় নথিও প্রস্তুত। হত্যা মামলায় ১৩ ভলিউমে ৫৮৫টি পেপারবুক। এটি প্রায় সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার। হত্যা মামলার ৫৮৫ পেপারবুকের মধ্যে আপিল ২২টি ও জেল আপিল ১২টি।

অন্যদিকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় ১১ ভলিউমে ৪৯৫টি পেপারবুক, যার পরিসর ১০ হাজার পৃষ্ঠা। এসব পেপারবুকের মধ্যে আপিল ১৭টি ও জেল আপিল ১২টি।

সব আসামির দণ্ড বহাল চাইবে রাষ্ট্রপক্ষ

গ্রেনেড হামলার মামলার আপিলের শুনানি হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছিল। এ কারণে এ মামলা শুনানির জন্যে প্রধান বিচারপতির কাছে দরখাস্ত করেছি। প্রধান বিচারপতি একটি বেঞ্চ ঠিক করবেন। আপনারা জানেন যে, মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলগুলো ফাইল করা হয়। সেইসব ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন নিশ্চিতকরণ) আসার পর প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্যে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। হাইকোর্টের সেই নির্দিষ্ট বেঞ্চই শুনানি করেন।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের মেনশন করার সম্ভাবনা নেই। এ কারণেই প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছি। এটা (গ্রেনেড হামলার মামলা) যেন বেঞ্চ নির্দিষ্ট করে দেন। আমি বলছি, সামনে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ আসছে। অবকাশে হয়তো সম্ভব হবে না। আমরা মনে করি, প্রধান বিচারপতি অবকাশের পর হয়তো একটি বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন। ওনি যে বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন, সেখানে শুনানি শুরু করবো।’

আসামিদের দণ্ড ও রায়ের বিষয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা কী হবে, জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘বিচারিক আদালত আসামিদের যাকে যে দণ্ড দিয়েছেন, তা সব যেন বহাল থাকে। মামলাটি দেখে আইনগত বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করবো। দণ্ড যাতে বহাল রাখা হয়, সেজন্য আরগুমেন্ট করবো।’

শিগগির মামলার আপিল শুনানি শুরু হবে
জানতে চাইলে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সবাই জানেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কতদিন পর শুরু হয়েছে। আবার জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে। সে কারণে অধস্তন আদালতে বিচার শেষ হতে দীর্ঘসময় লেগে গেছে। এটি এখন উচ্চ আদালতে। খুব শিগগির এ মামলার আপিল শুনানি শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ গঠন করলে তারিখ নির্ধারণে শিগগির ম্যানশন করা হবে। এ মামলার আপিল নিষ্পত্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার সবসময় আইনের শাসনে বিশ্বাসী। তার সরকারের সময় যেহেতু বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার হয়েছে, তাই সব হত্যা মামলারই বিচার হবে। আর গ্রেনেড হামলার মামলার ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত তৎপর। সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা বিদেশে আছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চেষ্টা করছে সরকার।’

এক নজরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়।

বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে। অতর্কিতে গ্রেনেড হামলায় মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। আহত হন অনেক সাংবাদিকও।

ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ২২ আগস্ট মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলাটি প্রথমে তদন্ত শুরু করে থানা পুলিশ। অবশ্য এরমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী আরও দুটি মামলা করেছিলেন। পরে এসব মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এ ঘটনার প্রথম থেকেই হামলাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। সাজানো হয় ‘জজ মিয়া’ নাটক। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেনেড হামলা মামলার পুনর্তদন্ত শুরু হয়। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে অনেক তথ্য। তদন্ত শেষে সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ জুন দুটি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। একটি হত্যা, অন্যটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের।

এতে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ নিয়ে মামলায় মোট আসামির সংখ্যা হয় ৫২ জন।

প্রস্তুত পেপারবুক, বেঞ্চ গঠন হলেই শুরু আপিল শুনানি

আসামিদের মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হুজি নেতা আবদুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ফলে এ মামলা থেকে তাদের নাম বাদ পড়েছে।

দুটি মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। আসামিদের মধ্যে অনেকেই জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা। একই অপরাধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে ‘ডাবল’ যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত।

হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স

গ্রেনেড হামলার দুই মামলার রায়সহ ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আসে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর। পরে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়েছে। এরপর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ২২ জন খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করেছেন। অন্যদিকে ১২ জন আসামি জেল আপিল করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জন

বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, শীর্ষ জঙ্গি মাওলানা তাজউদ্দিন।

মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন। তার মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জন

বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। তারা হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, আরিফুল ইসলাম আরিফ, শীর্ষ জঙ্গি মুফতি আবদুর রউফ, হাফেজ ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মুরসালিন, মুত্তাকিন, জাহাঙ্গীর বদর, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. ইকবাল, রাতুল আহমেদ, মাওলানা লিটন, মো. খলিল ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।

সাজাপ্রাপ্ত আরও ১১ জন

দুটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত ১১ জন হলেন- মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমীন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ওরফে ডিউক, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, সাবেক আইজিপি শহুদুল হক, সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী, জোট সরকার আমলের তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান ও সাবেক পুলিশ সুপার রুহুল আমীন।

দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ১৮ জনের কে কোথায়?

দণ্ডিত আসামির মধ্যে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জনকে মামলার নথিতে পলাতক দেখানো হয়েছে। এরমধ্যে তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে আছেন। হারিছ চৌধুরী ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিলেট সীমান্ত দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বর্তমানে তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তাজউদ্দিন বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন বলে জানা গেছে।

হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার ও কায়কোবাদ বিদেশে আছেন। তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। গ্রেনেড হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া দুই জঙ্গি মুরসালিন ও মুত্তাকিন অস্ত্রসহ ধরা পড়ার পর প্রায় দেড় দশক ধরে ভারতের কারাগারে আছেন।

শেয়ার করুন