ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে, রাশিয়ার হামলার ছয় মাস পূর্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনের শহরে শহরে ধ্বংসযজ্ঞ
ইউক্রেনের শহরে শহরে ধ্বংসযজ্ঞ। ফাইল ছবি

সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইউক্রেনের স্বাধীন হওয়ার ৩১ বছর পূর্ণ হলো। বুধবার (২৪ আগস্ট) স্বাধীনতা দিবস পালন করছে দেশটির মানুষ। তবে এই দিনটি কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার দিনে। ফলে নতুন করে স্বাধীনতার এক বার্তা দিচ্ছেন ইউক্রেনের নাগরিকরা।

রাশিয়ার গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলার ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার সময়ও স্থল, আকাশ ও সমুদ্র, তিন দিক থেকে আক্রমণের হুমকি পাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।

universel cardiac hospital

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী কিয়েভে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং যুদ্ধের সামনের সারিতে থাকা পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে কারফিউ বলবৎ রয়েছে। যেখানে কয়েক মাস ধরে গোলাবর্ষণ হচ্ছে।

সরকারের তরফে ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও অকেজো হয়ে যাওয়া রুশ ট্যাংক কিয়েভের রাস্তায় রেখে প্রদর্শনী করা হচ্ছে।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘রাশিয়ার উস্কানির’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। জেলনস্কি বলেন, ‘আমরা আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকির বিরুদ্ধে লড়ছি আর এটি এমন এক সময়ে যখন আমরা জাতীয় ঐক্যের সর্বোচ্চ স্তর অর্জন করেছি’।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জনগণকে বিমান হামলার সতর্কতাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ দেশটির ৪ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। বহু শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। এখন তারা সংলগ্ন কৃষ্ণসাগর ও আজভ সাগরের উপকূলবর্তী ইউক্রেনীয় অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। পূর্ব দিকে ডনবাস অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকাও তাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে রাশিয়াকে ঠেকাতে এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলছে, রাশিয়াকে প্রতিহত করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির ৯ হাজার সেনা।

যদিও রাশিয়া তাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা প্রকাশ করেনি। তবে মার্কিন গোয়েন্দাদের হিসাবে, যুদ্ধে ১৫ হাজারের মতো রুশ সেনা নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ার পুতিন সরকারের দাবি, তারা প্রতিবেশী দেশটিকে ‘নব্যনাৎসি’ মুক্ত করতে সেখানে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিচালনা করছে। আর এ হামলাকে বিনা উস্কানিতে ‘সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করছে ইউক্রেন।

১৯৯১ সালের এই দিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে বের হয়ে আসে ইউক্রেন। গণভোটে ইউক্রেনের নাগরিকরা স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন। সেই থেকে ২৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করে আসছে ইউক্রেন।

সূত্র: রয়টার্স

শেয়ার করুন