জাসদ গণবাহিনী ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের আড্ডাখানা : নানক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাহাঙ্গীর কবির নানক
জাহাঙ্গীর কবির নানক। ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের আড্ডাখানা হিসেবেই জাসদ গণবাহিনী সৃষ্টি করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক। শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

নানক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান তার অনুচর জিয়াউর রহমানকে ঢুকিয়ে দিয়ে, খন্দকার মোশতাকদের ঢুকিয়ে দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে চেয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র শুরু করে। সেদিন আমাদের দলের ভেতরে অস্থিরতা ছিল, সে অস্থিরতা সুফল বয়ে আনেনি।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও মোশতাকরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে পারেননি বলেই ১৯৭২ সালে মুসলিম বাংলা নামের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এরা সারাদেশে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকেৎ হত্যা করেছে।

‘সে সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে সত্য কথা আমাকে বলতেই হবে। সেদিন জাসদ গণবাহিনী সৃষ্টির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছিলো। সেদিন আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার করা হয়েছিলো।’

বামজোটের হরতাল দেশের জনগণ টের পাইনি বলে মন্তব্য করে নানক বলেন, আজ যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, তখন কিছু অপশক্তি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মাঠে নেমেছে। জনগণের মাঝে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে।

দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নানক বলেন, আমাদের খুব সর্তক হতে হবে। ওরা আবার নেমেছে। ওরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেবে না। সে কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা মাঠে নেমেছেন।

বিএনপির নির্বাচনে না আসার প্রসঙ্গে জাহাঙ্গির কবির নানক বলেন, লন্ডন থেকে নির্দেশ দিয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চান। আসেন না খেলার মনোভাব নিয়ে, আসেন না নির্বাচনে, দেখি বাংলার জনগণ কাকে রায় দেয়।

মির্জা ফখরুলরা নির্বাচনে আসতে পারবেন না, কারণ পলাতক ও দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান দেশে আসতে পারবেন না। মির্জা ফখরুল, তারেক রহমান আপনাদের নির্বাচনে আসতে দেবেন না। আসেন নির্বাচনে, বাংলার জনগণ শিক্ষা দিয়ে দেবে।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সময়ে নিজেদের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সেদিন কেন আমরা কার্যকর প্রতিরোধ, প্রতিবাদ গড়ে তুলতে পারলাম না? রাজপথে আন্দোলন করতে পারলাম না? এসব ব্যর্থতা নিয়েও আমাদের কথা বলতে হবে। এ ব্যর্থতার দায় আমাদেরই নিতে হবে।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচন এলেই তখনকার পরাজিত শক্তিরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্যইস হলো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। তাদের ষড়যন্ত্রগুলো সফল করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। অতীতের মতো এবারও তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুলতানা শফি। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহুমুদা বেগম কৃক।

শেয়ার করুন