ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া মুসলিম নেতা মুক্তাদা আল-সদর রাজনীতি ছেড়ে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর পরপরই বাগদাদে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত গ্রিন জোনে তার পদত্যাগকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার (২৯ আগস্ট) সেখানে ব্যাপক গোলাবর্ষণ হয়। বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষের জেরে ১৫ জেন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মুক্তাদা আল-সদর এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর এখন আমি রাজনীতি থেকে পুরোপুরি অবসরে যাওয়া এবং আমার সব সংগঠন বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছি’। তবে আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে জানান তিনি।
যদিও মুক্তাদা আল সদরের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে তিনি একই রকম ঘোষণা দেন।
ইরাকে রাজনৈতিক সংকটের জেরে কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদরের সমর্থকরা তাদের নেতার পদত্যাগের ঘোষণার পরেই সরকারি প্রাসাদে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তত সাতটি শেল গ্রিন জোনে পড়ে, যেখানে সরকারি ভবন এবং কূটনৈতিক মিশন রয়েছে। গ্রিন জোনে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলি চালানোর শব্দ পাওয়ার পর, গোলাবর্ষণের পেছনে কারা ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
নিরাপত্তাবিষয়ক সূত্র বলছে যে সদরের সমর্থকরা বাইরে থেকে গ্রিন জোনে গুলি চালায় এবং নিরাপত্তা বাহিনী এতে সাড়া দেয়নি বলে দাবি করে তারা।
সুরক্ষিত এলাকায় এর আগেও গুলি চালানো হয়েছিল বলে এএফপি’র একজন সংবাদদাতা বলেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে গুলিতে ১৫ জন নিহত ও ৩৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
ভিডিওতে দেখা গেছে যে, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরের বেষ্টনি এবং প্রবেশদ্বার ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ছে। অনেককে প্রাসাদের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতেও দেখা গেছে।
পরে তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দেশটির সেনাবাহিনী স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে কারফিউ জারি করে বাগদাদে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাদেমি বলেছেন, ‘নিরাপত্তা বা সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র লোকদের’ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে নিষেধ করা হয়েছিল।
ইরাকে প্রায় ১০ মাস আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে এখন পর্যন্ত নতুন সরকার গঠিত হয়নি।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি