‘গ্রাম-গঞ্জের বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

তাজুল ইসলাম
তাজুল ইসলাম। ফাইল ছবি

শুধু সিটি করপোরেশন বা বড় শহরেরই নয় গ্রাম-গঞ্জের ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

universel cardiac hospital

তাজুল ইসলাম বলেন, মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগ বেড়েছে। এতে করে গ্রাম-গঞ্জেও এখন প্রচুর বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। যদি গ্রাম এলাকার উৎপাদিত বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না করা যায় তাহলে ইকোলোজিক্যাল ব্যালেন্স নষ্ট হবে। নদী-নালা, খাল-বিল সবকিছু বর্জ্যের স্তূপে পরিণত হবে। এজন্য গ্রামের বর্জ্যগুলোকে সংগ্রহ করে পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

তিনি বলেন, একটি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট চালু করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বর্জ্যের দরকার হয়। একটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্ল্যান্ট স্থাপন করে গ্রামগঞ্জের সব বর্জ্য কালেকশন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

কিছু কিছু পৌরসভায় ছোট ছোট আকারের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি শুধু শহরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। টেকনোলজি প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। এখন যে প্রযুক্তি তাতে আগের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। বেশি উৎপাদন করা গেলে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। পরিবেশের ক্ষতি না করে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবেও উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিশ্রমের কারণে সারাদেশ শতভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। যদিও এখন রাশিয়া-ইউক্রেনের কারণে জ্বালানির কিছু সঙ্কট দেখা দেওয়ার প্রেক্ষিতে সব দেশে কিছু কিছু অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ যেভাবে এটিকে সামাল দিচ্ছে তাতে আমার মনে হয় পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে প্রসংশার দাবিদার।

দেড় শো-দুইশ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশ এখন দুই হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে মন্তব্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে যদি অপ্রত্যাশিত কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তাহলে এটি এবছরই ৩ হাজার ডলার অতিক্রম করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তরিত হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশ সমভাবে চলছে না। ইউরোপসহ অনেক দেশ তাদের বিদ্যুৎ ও ফুড সাপ্লাইয়ে পরিবর্তন এনেছে। ইউরোপের অনেক দেশে স্থিতিশীল অবস্থা নেই। এর মধ্যেও বাংলাদেশ ভালো আছে। এ কথাটা কেউ বলতে চান না। পৃথিবীর অনেক দেশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি লোডশেডিং দিচ্ছে। আমাদের দেশ তার চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম লোডশেডিং হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যেভাবে অব্যাহত রয়েছে এবং যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তাতে আমাদের কোনো চিন্তার কারণ নেই। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে একথারও কোনো ভিত্তি নেই। একটি গোষ্ঠী মানুষের মধ্যে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। মানুষ সুখে ও শান্তিতে থাকুক এটা তারা চায় না। এই গোষ্ঠী দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। এসব ষড়যন্ত্রকারীদের থেকে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীকে আহবান জানান তিনি।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।

শেয়ার করুন