মিয়ানমারের বর্তমান অভ্যন্তরীণ অবস্থা বিবেচনায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। ওই দেশটির একজন নাগরিকও যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানকার (মিয়ানমারের) অভ্যন্তরীণ অবস্থার হয়তো অবনতি হয়েছে। এটা মিয়ানমারের বিষয়। কিন্তু আমরা যেটা বলছি, এতে যেন বাংলাদেশের সীমান্ত আক্রান্ত না হয়। আমাদের অনেকে ভয় করছেন, সেখানে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা রয়েছে, তারা আবার বাংলাদেশে চলে না আসে। আমরা এ বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে, মিয়ানমারের একজন নাগরিকও যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে। আমাদের সংস্থাগুলো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে। যার ভিত্তিতে আমাদের সংস্থাগুলো, বর্ডার গার্ড, অন্যান্য বাহিনী যারা আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে আছে, তারা এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করবে।
মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৬ বা ২০১৭ সালে তাদের (রোহিঙ্গাদের) চলে আসাটা ঠেকাতে পারিনি বা আমরা ঠেকাতেও চাইনি। কারণ, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধানমন্ত্রী তাদের জায়গা করে দিয়েছেন। কিন্তু এবার একটা বিষয় আছে, আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে, যেটা ওই সময়ে ছিল না।
তিনি বলেন, গত ২০ ও ২৮ আগস্ট দুটি ঘটনা ঘটেছে। যেখানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোনো সংঘাতের অংশ হিসেবে সেখানকার দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমানায় পড়েছিল। তার পরপরই মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে তাঁকে প্রতিবাদপত্র এবং বিস্তারিত জানিয়েছি।
আগের মতো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে দলবদ্ধ হয়ে পালিয়ে এ দেশে আসার আশঙ্কা নেই বলে মনে করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা মনে করি না, এবার এ ধরনের ঘটনা ঘটবে। কারণ হলো, যে স্থানে এগুলো ঘটছে, সেখানে এখন সেই অর্থে কোনো রোহিঙ্গা থাকে না। সেখানে হয়তো তাদের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী দল যারা আছে, তাদের কোনো কোনো অংশ বিশেষ থাকতে পারে। কিন্তু সংঘাতটি হচ্ছে আমাদের সীমান্ত ঘেঁষে।
মিয়ানমারের উস্কানিতে বাংলাদেশ পা দেবে না জানিয়ে মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, উস্কানিতে বা ফাঁদে বাংলাদেশ পা দিতে চায় না। কারণ এ ধরনের একটা দিকে নিয়ে যেতে পারলে তাদের একটা কৌশলগত সুবিধা থাকবে এবং রোহিঙ্গা নিয়ে যে সমস্যাটা, এটার একটা দায় আমাদের দিকেও চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে।