মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) অভিযোগ করেছে যে ২০০৯ সাল থেকে নাকি র্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছেন। অথচ আমি র্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেওয়া হয়েছে? ২০০৯ সালে আমি এই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে চাকরিতে ছিলাম। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে ৬০০ লোককে গুমের অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের কোনো তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের কাছে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে এক নাগরিক সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা হিন্দাল কাদির বাপ্পা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। আজ শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে আইজিপি বেনজীর এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সেখানে গেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি বেনজীর আহমেদ নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই, যারা সত্তর সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের জন্য।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতাসংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছি। এখন চলছে মুক্তির লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে। দেশের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তা রুখে দিতে হবে।’ ‘একসময় মনে করা হয়েছিল যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাংবাদিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। কিন্তু বাস্তবে কী দেখছি আমরা’, এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আশা করা হয়েছিল সমাজের তথ্যচিত্রটি সবিস্তার উঠে আসবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, যত ভুয়া, আজগুবি তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘২২ জন তথ্য-সন্ত্রাসী রয়েছেন। এঁদের জবাব দিতে হবে। আপনি যে মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই বিশ্বাসে যদি চ্যাম্পিয়ন হোন, তাহলে আপনাকেই সেটি পালন করতে হবে।’
আইজিপি বলেন, তথ্য-সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, তারা মানবতাবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলেন, নোংরা জিনিস ফেসবুকে দেখামাত্র ফ্লাশ করা দরকার। এর বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্যকে উপস্থাপন করতে হবে, তাহলেই মিথ্যার পরাজয় ঘটবে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার চলমান লড়াইয়ে আমি সবার সঙ্গে রয়েছি।’ দেশকে সবার আগে রেখে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার পথকে সুগম রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
![](https://cloud.matopath.com/mop/2022/03/onnesha-ad.jpeg)