নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ সুপারসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৩ ধারা মোতাবেক আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, সব গণমাধ্যম বলেছে, পুলিশ গুলি করেছে। সেই সব ঘটনা দরখাস্তে উল্লেখ করে প্রমাণসহ আদালতে দাখিল করেছি আমরা। তবে সেটিকে আমলে না নিয়ে খারিজ করে দেওয়াটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এখানে কারও চাপ উপেক্ষা করতে না পেরে তিনি বেআইনিভাবে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের এই আদেশ আইনের পরিপন্থী। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব।
এর আগে যুবদল কর্মী শাওন প্রধানের মৃত্যুর ঘটনায় একই আদালতে আজ সকালে ৪২ জন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০–১০০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকার আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে আসার পথে সরকারি ইন্ধনে মামলার বিবাদীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেন।
একপর্যায়ে হাজারো নেতাকর্মী সমবেত হলে আসামিরা নিজেদের আইনগত দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারতে শুরু করেন। এরপর বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেন।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে যুবদল কর্মী শাওন লুটিয়ে পড়েন। বিবাদীরা এলোপাতাড়ি গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে ছাত্রদল নেতা ফারুক আহম্মেদের বুক ঝাঁঝরা হয়। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া আরও প্রায় ২০০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এটা স্পষ্ট যে বিবাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন, যা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি থেকে স্পষ্ট।
মামলার আবেদনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেনসহ ১১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল।