প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর ভারতীয় সমকক্ষ নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামীকাল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। তাঁর এ সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদনদীর পানি বন্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করবেন। করোনাভাইরাস মহামারি প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে তাঁর সর্বশেষ সফরের পর ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর আসন্ন ভারত সফরের সময় বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আজ রোববার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট আগামীকাল সকাল ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। ফ্লাইটটি দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময়) নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান অভ্যর্থনা জানাবেন।
দেশের একটানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে ভারতীয় বিমানবন্দরে একটি লাল গালিচা বিছানো হবে। এ সময় সেখানে ৬ থেকে ৭ সদস্যের একটি সাংস্কৃতিক দল স্বাগত নৃত্য পরিবেশন করবে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন, ৬ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হায়দ্রাবাদ হাউসে পৌঁছলে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন। শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তাঁর সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। ৫ সেপ্টেম্বর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে তাঁর।
৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা রয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করবেন এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী ৭ সেপ্টেম্বর তাঁর সাথে পৃথক সাক্ষাত করবেন। আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিও ৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের “মুজিব বৃত্তি” প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরিফ, আজমির (আজমির শরিফ দরগাহ) এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করবেন।