চলতি বছরের শুরু থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। কিন্তু আগস্ট মাস থেকে ডেঙ্গু সংক্রমণ চেপে বসে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে। এরই মধ্যে দৈনিক হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দুইশ ছাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসেই ডেঙ্গু সংক্রমণ সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাতে পারে।
এই অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, মশা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশন বলছে, ডেঙ্গুরোধে সাধারণ মানুষকেই সচেতন হতে হবে। অন্যথায় শত অভিযান চালিয়েও সুফল মিলবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৩৪৯ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথা হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল ডা. মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়বে। তবে মাসের শেষের দিকে আশা করছি কমে আসবে। এখন ডেঙ্গু সংক্রমণের পিক টাইম। এরপরও আমরা যদি গতবারের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে বলব, তুলনামূলক ভালো আছি।
ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের রোগীর সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৬৯৮ জন। আর এই আগস্টে রোগী ছিল ৩ হাজার ৩৭০ জন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৮৪১ জন। আর এই সেপ্টেম্বরে হয়তো সর্বোচ্চ হাজার চারেক রোগী হতে পারে।
গত মাসের তুলনায় এই মাসে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বমুখী চিত্র দেখছি সে হিসেবে বলা যায়, গত মাসের তুলনায় এ মাসে সংক্রমণ কিছুটা বাড়বে। ডেঙ্গুর সংক্রমণের ট্রেন্ড যেটা বলে, আগস্ট মাস থেকে বাড়া শুরু হয়, সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থান করে এবং অক্টোবর মাসে ধীরে ধীরে নেমে আসে। গত কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে। ২০১৯ সালে তো আমাদের সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছিল। সেই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু সংক্রমিত হয়েছিল ১৬ হাজার ৮০০ জন। এরপর অক্টোবর মাসে নেমে আসে ৮ হাজারে। সব মিলিয়ে বলব যে সেপ্টেম্বর ও আগস্ট মাস আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং।