ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ‘জ্বর’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পশ্চিমাদের এই ‘নিষেধাজ্ঞা জ্বর’ গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর বিবিসির। ভ্লাদিভস্তকে একটি অর্থনৈতিক ফোরামে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক ‘আগ্রাসন’ মোকাবিলা করছে রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার মান বলি দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দরিদ্র দেশগুলো খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছে না। ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে ইউরোপ দরিদ্র দেশগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলেও মন্তব্য করেন পুতিন। তিনি বলেন, আগস্টের প্রথম দিকে রপ্তানি শুরুর পর এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি খাদ্যশস্যের জাহাজ আফ্রিকায় গেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার পর থেকে দেশটির সমুদ্রবন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে রাখে রুশ বাহিনী। শেষ পর্যন্ত বিশ্ব খাদ্যসংকট এড়াতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় বন্দর সচলে চুক্তি করে ইউক্রেন ও রাশিয়া।
পুতিন বলেন, তুরস্ককে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে পাত্তা না দিয়ে বিশেষ করে ইউক্রেন থেকে রপ্তানি করা খাদ্যশস্য দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় পাঠানো হয়নি, বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোয় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার বিপুলসংখ্যক ব্যক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে চাইছে ইইউভুক্ত দেশগুলো। এদিকে কারিগরি ত্রুটির কারণ দেখিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের ‘নর্ড স্ট্রিম ওয়ান’ পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়েছে মস্কো।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, পশ্চিমারা তাদের আচরণ অন্য দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বহু কোম্পানি রাশিয়া ছাড়তে তোড়জোড় শুরু করেছিল। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা দেখছি, কীভাবে ইউরোপে একের পর এক কারখানা ও কর্মসংস্থান বন্ধ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, জনগণের চোখের সামনেই ডলার, ইউরো ও পাউন্ডের ওপর থেকে আস্থা সরে যাচ্ছে। পুতিন আরও বলেন, এই যুদ্ধ থেকে আরও শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে রাশিয়া। পুতিন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত—আমরা কিছুই হারাইনি এবং কিছুই হারাব না।’