বাড়ছে ডেঙ্গুর দাপট, সতর্ক হওয়া জরুরি

সম্পাদকীয়

ডেঙ্গু
ফাইল ছবি

দেশজুড়ে জুলাই মাস পর্যন্ত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল ডেঙ্গু পরিস্থিতি। কিন্তু আগস্ট মাস থেকে যেন ডেঙ্গু সংক্রমণ চেপে বসেছে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে। চলতি বছর ডেঙ্গুতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল আটটা থেকে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে ৩১ জনের মৃত্যু হলো।

হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর জন্য আলাদা চিকিৎসাব্যবস্থা থাকলেও ভয়ের কারণ হলো- রোগীর সংখ্যা যে দিন দিন বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৩৪৯ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে এ বছর সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে আগস্ট মাসে। সেখানে সেপ্টেম্বরের ৬ দিনেই মারা গেছেন ১০ জন।

universel cardiac hospital

বিশ্বজুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ২০১৯ সালে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী গত ৩০ বছরে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে ৩০ গুণ। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত ভোরবেলা ও সন্ধ্যার আগে কামড়ায়। সাধারণ চিকিৎসায়ই ডেঙ্গু সেরে যায়, তবে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বা হেমোরেজিক ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বর্ষার সময় সাধারণত এ রোগ বৃদ্ধি পায়।

মশক ও এর লার্ভা নিধনই হচ্ছে ডেঙ্গু রোগের প্রধান চিকিৎসা। এরপর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এর প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত হচ্ছে দেশের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো। যে হারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে—সংশ্লিষ্ট সব মহলের এ বিষয়ে মনোযোগ আরো বাড়াতে হবে, নইলে করোনা আর ডেঙ্গু মিলে আমাদের আরো পর্যুদস্ত করে তুলবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা আইন অমান্য করবে, তাদের জরিমানা করার পাশাপাশি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সম্পৃক্ত করতে হবে।

শেয়ার করুন