৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে ‘ফ্রি ট্রানজিট’ প্রদান, নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, রোহিঙ্গা ইস্যু, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার প্রতিরোধে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে। দুই নেতার বৈঠকের পর দুদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে ৭টি সমঝোতা স্মারকও। এগুলো হলো-সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের অধীনে কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার বিষয়ে সমঝোতা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ে ভারতের বিজ্ঞান ও শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সঙ্গে বাংলাদেশের বিএসআইআরের মধ্যে একটি সমঝোতা, বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে ভারতের ভূপালে অবস্থিত ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমির মধ্যে সমঝোতা, ভারতের রেলওয়ে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দুই দেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম ‘প্রসার ভারতী’র সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি সমঝোতা এবং বিটিসিএল ও এনএসআইএলের মধ্যে মহাশূন্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক একটি সমঝোতা।
বস্তুত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক রক্তের আখরে লেখা। ’৭১’ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশ দুটি মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক সহযোগিতা এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশের মাটি থেকে দ্রুত প্রত্যাহার করার মধ্য দিয়ে দুদেশের মধ্যে যে বন্ধন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা আজও অব্যাহত রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, এ সম্পর্ক জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উত্তরোত্তর ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হবে।