লিবিয়া উপকূল থেকে যাত্রা করা একটি নৌকা ৩৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসী নিয়ে ইতালির সিসিলিতে পৌঁছেছে। নৌকায় আসা দুই অভিবাসী জানিয়েছেন, ইতালি উপকূলে পৌঁছানোর আগে অভিবাসীরা টানা দুই দিন সমুদ্রে ভেসেছিলেন।
লিবিয়ার বেনগাজি উপকূল থেকে যাত্রা করা একটি অভিবাসী নৌকা ৩৮ অভিবাসী নিয়ে মঙ্গলবার ইতালির সিসিলি উপকূলে পৌঁছেছে। নৌকাটিতে আসা দুই অভিবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনফোমাইগ্রেন্টসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, অস্থায়ী নৌকায় আসা এই অভিবাসী দলের সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। যাদের মধ্যে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ হয়ে লিবিয়ায় এসেছিলেন। আবার অনেকেই পূর্ব থেকে লিবিয়ায় অভিবাসী হিসেবে অবস্থান করছিলেন।
অভিবাসীরা জানিয়েছে, মূলত তিন দিন আগে নৌকাটি লিবিয়া উপকূল থেকে যাত্রা করলেও যাত্রার একদিন পরেই খাবার ও জ্বালানি তেল শেষ হয়ে যায়। ফলে তাদের ইতালি উপকূলে আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সাগরের একটি অংশে একটি মাছ ধরার নৌকার কাছে সাহায্য চাইলে তাদের পানীয় জল ও খাবার দেওয়া হয়।
ইতালি উপকূলে আসার পর দেশটির কোস্টগার্ডের সদস্যরা নৌকায় থাকা সব অভিবাসীদের সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে উপকূলে নিয়ে আসেন। আশ্রয় আবেদনের প্রাথমিক কাজ শেষ হলে তাদের সবাইকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে।
মধ্য ভূমধ্যসাগরের বেশ কিছু অংশে সাগর উত্তাল থাকায় নৌকাটি বারবার ঝুঁকিতে পড়ে যাওয়ায় যাত্রার এক পর্যায়ে অভিবাসীদের অনেকেই আতংকিত হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত বড় কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই সবাই ইতালি উপকূলে আসতে সক্ষম হয় বলে জানায় ইনফোমাইগ্রেন্টসকে সাক্ষাৎকার দেওয়া দুই অভিবাসী।
আফ্রিকা, এশিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বড় একটি অংশ প্রতি বছর পৌঁছায় ইতালিতে। এই তালিকায় বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের মধ্যে বরাবরই উপরের দিকে থাকছেন বাংলাদেশিরা।
২০২২ সালের প্রথম আট মাসেই তাদের সংখ্যা ২০২১ সালে ১২ মাসে আগতদের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ১৮ আগস্ট প্রকাশিত ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি বছর সবচেয়ে বেশি অভিবাসীর আগমন ঘটেছে জুলাই মাসে। তখন ১৩ হাজার ৮০১ জন পৌঁছায় দক্ষিণ ইউরোপের দেশটিতে। আর চলতি মাসের ১৮ দিনে এসেছেন আট হাজার ৩০৬ জন৷ অপেক্ষাকৃত অনুকূল আবহাওয়ার কারণে গ্রীষ্মে বরাবরই সমুদ্রপথে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ে।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস