ড. আকবর আলি খানের মৃত্যুতে মোকতাদির চৌধুরীর শোক

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

universel cardiac hospital

শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান ছিলেন স্পষ্টভাষী ও নির্ভীক বুদ্ধিজীবী। তিনি মানুষের নাগরিক অধিকারের পক্ষে সবসময় উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। সত্য কথা অপ্রিয় হলেও সেটি অকপটে বলার সৎসাহস তাঁর ছিলো। তাঁর চিন্তা ও লেখনিতে অর্থনীতি, ইতিহাস, সমাজ ও সাহিত্য নিয়ে ছিল গভীর অন্তর্দৃষ্টি। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাঁর মৃত্যুতে দেশের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে মারা যান ড.আকবর আলি খান।

আকবর আলি খানের ভাই কবির উদ্দিন খান জানান, আকবর আলি খান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার বাদ জুমা গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর জানাজা হবে। জানাজার পর তাঁকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন ইতিহাস, কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি। পিএইচডি গবেষণাও অর্থনীতিতে। আমলা হিসেবে পেশাজীবনের প্রধান ধারার পাশাপাশি চলেছে শিক্ষকতাও। অবসর নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে। এরপর দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন, দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতার মুখে পদত্যাগ করেন। অবসরের পর তাঁর আবির্ভাব ঘটে পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে। অর্থনীতি, ইতিহাস, সমাজবিদ্যা, সাহিত্য—বিচিত্র বিষয়ে তাঁর গবেষণামূলক বই পাঠকের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।

আকবর আলি খানের সর্বশেষ আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘পুরানো সেই দিনের কথা’। এই গ্রন্থে একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের জীবনের উন্মেষ ও বিকাশের কাহিনি উঠে এসেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের জলাভূমিতে লালিত সাদাসিধে বালকটি ছিলেন কল্পনাবিলাসী ও অন্তমু‌র্খী। মুখচোরা বালকটি মাঠপর্যায়ের প্রশাসক হন। দায়িত্ব নেন আইনশৃঙ্খলা, ভূমি প্রশাসন, উন্নয়ন প্রশাসন, নির্বাচন, এমনকি চা-বাগানের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার।

শেয়ার করুন