ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইজিয়ামে ৪৪০টি মরদেহ পাওয়ার দাবি করছে দেশটি। এই শহরটি সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের দাবি করে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে গোলাবর্ষণে বেশকিছু মানুষ নিহত হওয়ার খবরও আসে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টুইটার বার্তায় জানিয়েছে যে, ‘রাশিয়ানদের কাছ থেকে মুক্ত করার পর ইজিয়ামে গণকবরের সন্ধান মিলছে’, ৪৪০টি মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেন, তাদের সৈন্যরা আট হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রাশিয়ার কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে। মূলত খারকিভ অঞ্চলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। খারকিভ অঞ্চলে লজিস্টিক হাব হিসেবে ব্যবহার করা ওই শহর থেকে হাজার হাজার রুশ সেনা পালিয়েছে, এমন দাবি করছে ইউক্রেন।
শহরটি থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধারের দাবিও জানায় ইউক্রেনের সেনারা।
খারকিভ অঞ্চলের পুলিশের প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা সের্হি বলভিনভ স্কাই নিউজকে বলেছেন, ‘ নিহতদের মধ্যে কেউ কেউ আর্টিলারির গুলিতে মারা গেছেন…কেউ কেউ বিমান হামলায় মারা গেছেন’।
রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেনের দেওয়া এ তথ্য যাচাই করতে পারেনি এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার ইজিয়াম শহর পরিদর্শন করেন। তিনি যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠ বুচাতে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ান বাহিনীর কথিত যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে এ ঘটনাকে তুলনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, এসব মৃত্যুর জন্য রাশিয়াকে দায় নিতে হবে। যদিও রাশিয়া বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করা বা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। রাশিয়া এখনো দেশের প্রায় এক পঞ্চমাংশ দখল করে আছে দেশটির। কিন্তু বিশ্লেষকদের অনেকেই রুশ সেনাদের পশ্চাদপসরণকে ইউক্রেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করছেন।
৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সম্প্রতি খারকিভে পাল্টা প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলে ইউক্রেনের সেনারা। ইউক্রেনের দাবি, ক্রেমলিনের সেনারা পিছু হটছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেন।
এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার জেরে গোটাবিশ্বে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বেড়ে গেছে সব পণ্যের দাম। সংকট মোকাবিলা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে।
সূত্র: ব্লুমবার্গ, রয়টার্স।