সীমান্তে মিয়ানমারের অব্যাহত সহিংসতার পরও বাংলাদেশ সংযত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লন্ডন সফররত সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টার্মার। সেখানেই এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে রোহিঙ্গাদের চাপ বহন করে চলেছে বাংলাদেশ। এ অবস্থার মধ্যেই সীমান্তে মিয়ানমারের সামরিক তৎপরতা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের সদস্য স্বরাজ পল। এ সময় তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য এবং শিক্ষাক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসাও করেন স্বরাজ পল।
এদিকে, তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেলে এক রোহিঙ্গা নিহতের পর শনিবারও (১৭ সেপ্টেম্বর) গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিরাপত্তার কারণে গ্রাম ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ৩৫টি পরিবার। এদিকে, ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
তুমব্রু কোনারপাড়ার বাসিন্দা নুর হাসিনা জানান, তার বাড়িতে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এসে পড়ে একটি মর্টার শেল। কিন্তু সেটি বিস্ফোরিত হয়নি। তবে, তার বাড়ির কিছু দূরে আরও একটি মর্টার শেল পড়ে বিস্ফোরিত হয়। এই আতঙ্কে তার পুরো পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু মাঝেরপাড়ায়।
শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টার শেল বিস্ফোরণের পর শনিবার সকালেও কয়েকটি গোলার বিকট শব্দ হয়েছে। আর শূন্যরেখায় মর্টার শেলের বিস্ফোরণে আহতরা এখনো উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় চলাচলে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। এতে আতঙ্কে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশের ভেতরে মর্টার শেল এসে পড়ায় কোনারপাড়ার ৩৫টি পরিবার এখন অন্যত্র নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সরিয়ে উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমারের ছোড়া ৪টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়। এ ছাড়া আরও ছয়জন আহত হন বলে জানা যায়।