জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব গোটা বিশ্বে পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে গেল এক দশকের তুলনায় শুষ্কতম বছরের তকমা পেয়েছে ২০২২ সাল। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে ৫০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে এখন ইউরোপ। এছাড়াও, অনাবৃষ্টির কবলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।
জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের প্রভাবে চলতি গ্রীষ্মে স্মরণকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ডের সাক্ষী হয়েছে ইউরোপ। তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখেছে চীনও। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে দেশটি। আশঙ্কাজনক হারে নেমে গেছে পানির স্তর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রতিনিয়তই মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বিশ্ব। দিন দিন বাড়ছে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা। দেখা দিচ্ছে অনাবৃষ্টি। গেল কয়েক দশকের গড় তাপমাত্রা গবেষণা করে এরই মধ্যে ২০২২ সালকে ইতিহাসের শুষ্কতম বছর হিসেবেও অভিহিত করছেন কেউ কেউ।
শুষ্কতা পরিমাপের জন্য বিজ্ঞানীরা যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তার মধ্যে একটি উপগ্রহের ছবির সাহায্যে মাটির আর্দ্রতা পরিমাপ করা। এ পদ্ধতিতে গেল তিন মাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে এ শতাব্দীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত গড় শুষ্কতার হার তুলনা করে সাম্প্রতিক সময়ে আবহাওয়ার অস্বাভাবিক পরিবর্তনের একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল দুই দশকের মধ্যে গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রার হার বিবেচনায় উষ্ণতম বছর ২০২২। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে স্মরণকারের ভয়াবহ দাবদাহে যেমন পুড়েছে ইউরোপ, তেমনি চীনের কিছু অংশেও দেখা দেয় তীব্র খরা। এমনকি অনাবৃষ্টির কবলে পড়ে খরা দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে ৫০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ খরার মুখোমুখি ইউরোপ। শুধু তাই নয়, ইউরোপের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির স্তরও আশঙ্কাজনক হারে নেমে যেতে শুরু করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী দিনগুলোতে ইউরোপে আরও বেশি খরা দেখা দেয়ারও আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।’
এছাড়া, ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা বলেন, ১২শ বছরের মধ্যে গেল দুই দশক ধরে তীব্র খরা পরিস্থিতি দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চল। এতে করে দাবানল সৃষ্টির পাশাপাশি জলাধারে নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। জলবায়ু সংক্রান্ত একাধিক মডেল বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ অঞ্চলে সামনের দশকগুলোতেও অনাবৃষ্টির এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার বেড়ে যাওয়ায় আফ্রিকার প্রায় আড়াই কোটি মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।