ইতিহাসের সবচেয়ে প্রলয়ংকরী ও প্রাণঘাতী বন্যার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে চরম ভয়াবহ মানবিক সংকটের জন্ম দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, পাকিস্তানে বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ শিশু। এর মধ্যে অন্তত ৩৪ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। খবর সিএনএনের।
পাকিস্তানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ ফাদিল গত সপ্তাহে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধু প্রদেশের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপরপরই তিনি দুর্গত এলাকার শিশুদের রক্ষায় জরুরি সহায়তার এই আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের ছেলেমেয়েদের জলবায়ু পরিবর্তনের মূল্য চোকাতে হচ্ছে। অথচ এর পেছনে তাদের দায় নেই বললেই চলে।’
ন্যাশনাল ডিজাস্টার অথরিটি অব পাকিস্তানের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে দেখা দেওয়া বন্যায় পাকিস্তানে ১ হাজার ৫৪৫ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৫৫২। সরকারি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, অনেক জায়গা থেকে হতাহতের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই বন্যায় নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। মশাবাহিত এই রোগে অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত সিন্ধু প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজরা পেচুহো বলেছেন, চারপাশে পানি থইথই করছে। বন্যায় অনেক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। ‘জরুরি অবস্থা’ জারি রয়েছে। এই পরিবেশ এডিস মশার লার্ভার বিকাশে উপযুক্ত। তাই বন্যার পাশাপাশি ডেঙ্গু এখন চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিন্ধু প্রদেশ ঘুরে এসে আবদুল্লাহ ফাদিল বলেন, সিন্ধু প্রদেশের পরিস্থিতি বেশ দুঃখজনক। সেখানে অপুষ্টিতে ভোগা অনেক শিশুকে এখন ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মতো প্রাণঘাতী রোগের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়েছে।