চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ৮৬ লাখ (১০০৮ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন) ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১০ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ধরে)। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৪ কোটি ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার।
আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২২ কোটি ডলার। এরপর সিটি ব্যাংকে এসেছে ৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৭ কোটি ৩০ লাখ, অগ্রণী ব্যাংকে ৬ কোটি ২৩ লাখ এবং ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে ৫ কোটি ২১ লাখ এবং পূবালী ব্যাংকে এসেছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও উরি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন ছাড় ও সুবিধা প্রদানের ফল দেখা যাচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের টানা দুই মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত আগস্ট মাসের ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। জুলাই মাসে ঈদ-উল আজহার কারণে বেশি রেমিট্যান্স আসে। তবে আগস্টে বড় উৎসব ছিল না, তারপরও প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়ায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, হঠাৎ বেসরকারি খাতের অনেক ব্যাংক সরকারি ব্যাংকগুলোর চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আনছে। কারণ, এসব ব্যাংক বেশি দামে বিদেশ থেকে ডলার কিনছে। প্রবাসীরাও বেশি দাম পাওয়ায় এসব ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
এখন বিদেশ থেকে যেকোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগে না। এছাড়া প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।
ডলারের সংকট নিরসন এবং প্রবাসী আয় বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরা বসে গত ১১ সেপ্টেম্বর ডলারের বিপরীতে সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেয়।
ঘোষিত দাম অনুযায়ী, এখন থেকে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৮ টাকায় কিনতে পারবে ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ‘টাকার বিনিময় মূল্য’ অংশে বলা হয়েছে, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে এবং বাফেদার নির্দেশনা অনুযায়ী আন্তব্যাংক লেনদেন এবং গ্রাহক লেনেদেনের জন্য টাকার বিনিময়মূল্য নির্ধারণ করছে ব্যাংকগুলো।
সবশেষ ১৮ সেপ্টেম্বরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্নও ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা দেয়া আছে। অর্থাৎ আজ আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলার বেচাকেনা চলছে এই দরে।