সাকিব শুভেচ্ছাদূত থাকবে কি না এখনই সিদ্ধান্ত নয়: দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তাদের শুভেচ্ছাদূত থাকবে কিনা সেই বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার বিকালে মিশর থেকে লিজ নেওয়া উড়োজাহাজের অনিয়মের বিষয়ে ব্রিফিংকালে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের একথা জানান।

বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ২০১৮ সালে একটি চুক্তি করে দুদক। এরপর সাকিব বিনা পারিশ্রমিকে দুদকের অভিযোগ হটলাইন ১০৬ চালুর সময় একটি তথ্যচিত্র করেন।

কমিশন সচিবের কাছে সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল সাকিব আল হাসানের সঙ্গে চুক্তি কত দিনের, কবে শেষ হবে? জবাবে মাহবুব হোসেন বলেন, অভিযোগ আসুক আমরা দেখি। আপনারও অপেক্ষা করুন। অভিযোগ এলেই তো সঙ্গে সঙ্গে কোনো কিছু হয় না। একটু সময় দেন।

মিসরের ইজিপ্ট এয়ারলাইনস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস উড়োজাহাজ কেনায় দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কমিশন সচিব বলেন, এ পর্যন্ত সাতজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধানের স্বার্থে আরও অন্যান্য কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০১৪ সালে ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি বোয়িং উড়োজাহাজ পাঁচ বছরের জন্য লিজ ভিত্তিতে নিয়ে আসে। পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এটি অনুসন্ধান করে। তারা দেখতে পায়, বিমান দুটি যথাযথ মানের ছিল না, ইঞ্জিন বিকল হয়ে গিয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে দেশের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, মোট সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজকেই জিজ্ঞাসাবদ করা হয়েছে চার কর্মকর্তাকে, তারা হলেন, সিভিল এভিয়েশেন অথরিটির প্রিন্সিপাল এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সাইফুল হক শাহ, গোলাম সারওয়ার, বিএফসিসি ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া ও কামাল উদ্দিন আহমেদ।

এর আগে বিমানের আরো তিন কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবদ করেছে দুদক, তারা হলেন- বিমানের প্রধান প্রকৌশলী মেনটেইনেন্স এসএম সিদ্দিক, প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার এসএম হানিফ এবং প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী। এছাড়া দুদকের ডাকে হাজির হননি ফ্লাইট অপারেশন পরিচালক এবং পরিদর্শক দলের টিম লিডার ইশরাত আহমেদ।

২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিশরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং সেভেন সেভেন সেভেন টু হান্ড্রেড ইআর মডেলের দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

প্রথম বছর শেষেই দুটির এয়ারক্রাফটেরই ইঞ্জিন বিকল হয়। ইঞ্জিন গুলো প্রায় ১২-১৫ বছরের পুরানো এবং এর উড্ডয়ন যোগ্যতার মেয়াদকাল কম থাকায় ইঞ্জিনগুলো পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজ সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন।

দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয়েছে ১১শ’ কোটি টাকা। যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে। স্থায়ী কমিটির পাঠানো প্রতিবেদনের আলোকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

এখানে লীজ চুক্তির এবং দরপত্রের স্পেসিফিকেশনে কোন দুর্বলতা আছে কিনা এগুলোর অনুসন্ধান চলছে।

নতুন করে অধিযাচন পত্র প্রেরণ করা হয়েছে-ইজিপ্ট এয়ারের সাথে লীজ চুক্তিটি চেয়ে; বিমান লীজ সংক্রান্ত প্ল্যানিং এবং মূল্যায়ন প্রতিবেদন; ইঞ্জিন বিকল এবং এর মেইন্টেনেন্স এর প্রতিবেদনসহ আর্থিক ব্যয় বিবরণী।

প্রয়োজনে এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

শেয়ার করুন