ইরানে পুলিশি হেফাজতে তরুণীর মৃত্যু, বিক্ষোভ– সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানে পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের আজ ষষ্ঠ দিন। ইরানের বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের গতকাল বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন।

ইরানের সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় আইনজীবীরা জানিয়েছেন, গত দুইদিনে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সরকার সমর্থকও রয়েছেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইরানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

ইরানে পুলিশি হেফাজতে তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটির বাইরেও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা আমিনির ছবি হাতে প্রতিবাদ করেন।

শুরুতে ইরানের কুর্দি-জনবহুল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এ বিক্ষোভ কেন্দ্রীভূত ছিল। পরে এটি খুব দ্রুত দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের অন্তত ৫০টি শহরে এখনো বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল ইরানে। রয়টার্সের তথ্যমতে, এরপর এত বড় বিক্ষোভ আর হয়নি দেশটিতে।

চলমান বিক্ষোভ ২০১৯ সালের বিক্ষোভের তুলনায় আরও ব্যাপক। দেশটির মানবাধিকার সংগঠন হেনগাওর তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ১০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকালই তিনজন মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজনকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হত্যা করেছে। তবে এই সংগঠনের পরিচয় যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের হত্যা করেনি। তারা বলছেন, বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র ভিন্নমতাবলম্বীদের গুলিতে মারা যেতে পারেন।

ইরানে জনপরিসরে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দাবিধি রয়েছে। এই বিধিগুলো কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারক করে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই বিধির আওতায় নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের একটি দল গত সপ্তাহের মঙ্গলবার মাহসা আমিনি নামক এক তরুণীকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরান সফরে গিয়েছিলেন।

আটকের পর তিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মহলেও এ ঘটনার সমালোচনা করা হয়।

শেয়ার করুন