‘দণ্ডিতদের জামিনে অপরাধের গভীরতা বিবেচনা করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

অপরাধের গভীরতা বিবেচনা না করেই শুধু বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দণ্ডিত অপরাধীকে জামিন দেওয়ার সুযোগ নেই বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

২৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) ‘দুদক বনাম মো. কুতুব উদ্দিন আহমেদ’ মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে।

রায়ে আদালত বলেছেন, জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা। যখন অপরাধ জামিনযোগ্য হয় তখন বিচারাধীন আসামির জামিন নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধ অজামিনযোগ্য হলে অসুস্থ ও জরাগ্রস্ত বন্দি, নারী ও শিশুর জামিন বিবেচনা করার সুযোগ আদালতের রয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারাধীন বা দণ্ডিত আসামির জামিন মঞ্জুরের বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন, একসঙ্গে মেলানোর সুযোগ নাই।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে আপিল বিভাগ আরও বলেছেন, কোনও মামলায় জামিন দেওয়া বা না দেওয়া হাইকোর্টের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা। কিন্তু যখন কোনও মামলায় যুক্তির বাইরে গিয়ে হাইকোর্ট জামিনের সিদ্ধান্ত দেয় তখনই আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ করে। বর্তমান মামলায় আসামির আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত থাকার পরেও শুনানি না করে আসামিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিয়েছে। যা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। হাইকোর্টের উচিত ছিল, যেহেতু আসামির আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত সেহেতু তা দ্রুত নিষ্পত্তি করা। কিন্তু সেটা না করে বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে জামিন দিয়েছে। এ কারণে আমরা মনে করি, হাইকোর্টের জামিনের সিদ্ধান্ত ছিল অবিবেচনাপ্রসূত ও ন্যায়ভ্রষ্ট। সেজন্য ওই জামিন আদেশ বাতিল করা হলো।

এর আগে শ্বশুরসহ কয়েকজন আত্মীয়ের নামে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলার বিচার শেষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়।

সে আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় গত ১৪ জুলাই হাইকোর্ট আসামিকে কুতুব উদ্দিনকে ৬ মাসের জামিন দেন। পরে জামিন বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের জামিন বাতিল করে দেন আপিল বিভাগ।

শেয়ার করুন