পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রকৃতি ও প্রতিবেশের ভারসাম্য রাখার পরামর্শ দিলেন মোকতাদির চৌধুরী

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, বিশ্বের যেকোনো দেশের প্রকৃতি ও প্রতিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে যদি কাজ করা যায়, তবেই পর্যটন শিল্পকে দ্রুত বিকশিত করা সম্ভব। বাংলাদেশে এই কাজটি করার জন্য আমরা সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য প্রদানের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধু যেভাবে চেয়েছিলেন সেইভাবে যদি পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হতো তাহলে আমরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে থাকতাম। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছিলেন তারা এই শিল্পকে ঠিক ভাবে যত্ন নেয়নি। প্রকৃত পক্ষে তারা দেশটাকে নিয়েও ভেবেছেন কিনা, সে বিষয়েও যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশে বঙ্গবন্ধুর পরে বাংলাদেশে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে সেটিও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের হাত ধরে।

এসময় সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন খাত নিয়ে তৈরি করা মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে তা জিডিপিতে ১০ শতাংশ অবদান রাখবে।’ ‌এজন্য সংবাদ মাধ্যম ও সংবাদ কর্মীদের ট্যুরিজম নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ প্রচার এবং লেখালেখির অনুরোধ জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যটনের বিকাশে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। প্রতিটি জেলায় পাঁচজন করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক থাকেন। তাদের একজনকে আমরা পর্যটনের দায়িত্ব দিতে চাই, সে অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। তিনি জেলার প্রতিটি উপজেলার পর্যটন নিয়ে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের প্রতিটি জেলা উপজেলায় ব্র্যান্ডিং করার মতো নানা উপাদান আছে। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের পর্যটনকে তুলে ধরার জন্য আরও ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এজন্য তিনি সব গণমাধ্যম কর্মী ও মিডিয়াকে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করেন।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও একটি সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ কুমার দেব।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আলী কদর, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান ডিআইজি ইলিয়াস শরীফ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব রেজাউল করিম এবং ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি শিপলুল আজম কোরেশী প্রমুখ।‌

আলোচনা সবার শেষে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের তোলা ছবি নিয়ে প্রতিযোগীদের বিজয়ীদের মাঝে তিন ফটোগ্রাফারকে পুরস্কার তুলে দেন মন্ত্রী।

এর আগে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে পর্যটন ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। ‌এতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ট্যুর অপারেটর সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন