বাবুল আক্তার ও সাংবাদিক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলা নিয়ে ‘মিথ্যা’ তথ্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন, স্ত্রী হত্যার অভিযোগে কারাবন্দী বাবুল আক্তারসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য দুজন হলেন—হাবিবুর রহমান লাবু ও তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।

পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার পক্ষে ডিএমপির কলাবাগান থানায় মামলাটি করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করতে পিবিআই কর্মকর্তারা ধানমন্ডি থানায় গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া) আবু ইউসুফ।

universel cardiac hospital

পিবিআই প্রধানের পক্ষে পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলমের মামলা করার কথা বলে জানান তিনি। রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডি থানায় যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলা নম্বর ২৪। তদন্তের দায়িত্বে থাকছেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রবিউল ইসলাম।

বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেন প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সেই ভিডিওতে বনজ কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে বাবুলকে রিমান্ডে নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনেন তিনি।

ইলিয়াস হোসাইনের পোস্ট করা ভিডিওতে বলা হয়েছে, এই মামলায় বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসিয়েছেন বনজ কুমার। এছাড়া স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তাকে রিমান্ডে নির্যাতনও করা হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর অভিযোগও রয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পরে বাবুল আক্তারের করা মামলায় মিতু হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ততা পাওয়ার দাবি করে পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। তখন থেকে দুটি মামলার তদন্তও করছে পিবিআই।

এদিকে ইলিয়াসের ভিডিওটি প্রকাশের পরই বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। এই মামলার পর কারাগারে বাবুল আক্তারের সেলে পুলিশ তল্লাশি করে বলেও অভিযোগ করা হয়। তবে দুটি আবেদনই খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

শেয়ার করুন