পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থেকে শুরু করে সার্জন- সবকিছুই আছে। তারপরও ৮০ ভাগ রোগী বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো ঘাপলা আছে।
তিনি বলেন, ২০-৩০ বছর আগে চোখ, হার্টসহ (এ ধরনের চিকিৎসায়) দেশে কোনো ইনস্টিটিউট ছিল না, এখন অনেক হয়েছে। তারপরও আরও ভালো করতে হবে। কারণ, ভালো কাজে প্রতিযোগিতার কথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে মেডিকেল অনকোলজি সোসাইটি ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ঢাকা ক্যানসার সামিট-২০২২’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, দুঃখজনক বিষয় আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হলেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভারত, সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে চিকিৎসা নিতে যায়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিমানে করে দিল্লি, মাদ্রাজ, সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে যাচ্ছে। অনেকে পড়াশোনার জন্য যায় সেটা ঠিক আছে, কিন্তু বড় অংশ যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। নিশ্চয়ই এর পেছনে কারণ রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকে ২৫-৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তবে যে উদ্দেশ্যে এসব ক্লিনিক হয়েছে সেটি পূরণ না হওয়ার পেছনে কারণ রইছে। আমাদের আর্থসামাজিক পরিবর্তনের যে গতি এসেছে, ২০৪০-৪১ সালের দিকে উন্নত দেশে পৌঁছানোর যে পরিকল্পনা- তা বাস্তবায়নে সবাইকে পরিশ্রম করতে হবে। এ জন্য গ্রামাঞ্চলেও চিকিৎসা ব্যবস্থায় জোর দিতে হবে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই গ্রামে থাকে।
চিকিৎসকদের গবেষণায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে গবেষণা হচ্ছে না, যার কারণে প্রধানমন্ত্রীও অনেকটা ক্ষুব্ধ। চিকিৎসকদের অন্যতম প্রধান কাজ গবেষণা। এর জন্য অর্থের প্রয়োজন হলে সরকার তা দেবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যয় বলেন, ক্যানসার অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। সাম্প্রতিক সময়ে এর প্রকোপ বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে মুখের ক্যানসারসহ নানা ক্যানসারের রোগী দেখা দিলেও উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ফলে বেশিরভাগ রোগীকে ঢাকামুখী হতে হয়। বিশেষ করে জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আসেন। স্থানীয় পর্যায়ে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে এ রোগী কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, বিশ্বজুড়েই ক্যানসার চিকিৎসা একটি বড় সমস্যা। শুধু বয়স্করা নয়, কম বয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য ডায়াগনসিস বাড়ানোর বিকল্প নেই। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ক্যানসার নির্ণয়ে ডায়াগনসিস সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সংকট (ক্যানসার চিকিৎসায়) অবকাঠামো এখনো দুর্বল। কার্ডিয়াক অবস্থা অনেক ভালো। কিন্তু ক্যানসার চিকিৎসায় এখনো পিছিয়ে আমরা।