নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করেও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিবছর গড়ে আকর্ষণীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় থেকে মানুষের জানমাল রক্ষায় বৈশ্বিকভাবে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এতে।
শনিবার (১ অক্টোবর) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এ সাফল্যের কথা তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বেসরকারি খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়াতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক দেশ থেকে এ খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি ভালো। ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৪০০ কোটি ডলার সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ পেয়েছে। এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরের মধ্যে শুধু করোনার দুই বছর ছাড়া বাকি সময়ে গড়ে ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। করোনার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাড়ে ৩ শতাংশ এবং পরের বছর প্রায় ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব পরিস্থিতি যখন টালমাটাল তখনও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশেষ করে উপকূলের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য কারণে বিপর্যয়কর পরিবেশের মধ্যে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়। উপকূলের মানুষদের রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ উপকূলে ব্যাপকভাবে কাজ করছে জানিয়ে বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো।
প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা তুলে ধরে বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশ সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে বিশেষ পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে দুর্যোগ প্রতিরোধে আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত করার ব্যবস্থা রেখেছে।
২০২০ থেকে ২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৮-সদস্যের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামের সভাপতি হিসাবে চমৎকার কাজ করছে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা চালু করেছে। এতে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি শক্তিশালী হবে।