হত্যা মামলার পাঁচ বছর পর বাঁশঝাড় থেকে কঙ্কাল উদ্ধার

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

২০১৭ সালের সেপ্টেস্বর মাসে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলায় মীর খাইরুল ইসলাম (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এ ঘটনার ৫ বছর পর ওই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার একজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় একটি কবরস্থানের বাঁশঝাড় থেকে ওই ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করেছে ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশ (অপরাধ তদন্ত বিভাগ)।

বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। রাতে ঝালকাঠিতে নিজ অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান সিআইডি ঝালকাঠি কার্যালয়ের সহকারী পুলিশ সুপার মো. এহসানুল হক।

universel cardiac hospital

নিহত মীর খাইরুল ইসলাম রাজাপুর উপজেলার পূর্ব কানুদাসকাঠি গ্রামের আনসার আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় বাস কাউন্টারের কর্মচারী ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজাপুর বাইপাস মোড় থেকে নিখোঁজ হন খাইরুল। এ ঘটনায় অপহরণের পর খুন ও লাশ গুম করার অভিযোগ এনে রাজাপুর থানায় মামলা করেন খাইরুলের ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম। আসামি করা হয় স্থানীয় সৈয়দ জেহাদুল ইসলাম, রিয়াদ, কাজল, পলি বেগম, রুস্তম এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ–ছয়জনকে। রাজাপুর থানা–পুলিশ ফোরকান নামের একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করলেও তাঁর কাছ থেকে কোনো তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন পান।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির উপপরিদর্শক মো. বাবুল হোসেন। সোর্সের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত সোমবার কানুদাসকাঠি গ্রাম থেকে মিজান হাওলাদার (৪৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ব কানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানের বাঁশঝাড় থেকে খাইরুলের কঙ্কাল এবং পরনের জিনসের প্যান্টের অংশ ও বেল্ট উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার মিজান হাওলাদারের বরাত দিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার এহসানুল হক বলেন, মিজানের দুই ভাই সোহাগ ও মনির এবং স্থানীয় ফোরকান ও গিয়াস মিলে খাইরুলকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেন। প্রথমে লাশ ফোরকানের বাড়ির পেছনে পুঁতে রাখা হয়। এক মাস আগে কঙ্কালটি তুলে এনে কানুদাসকাঠি গ্রামের একটি কবরস্থানে বাঁশঝাড়ের নিচে পুঁতে রাখেন সোহাগ ও মনির। ওই সময় বিষয়টি দেখে ফেলেন মিজান হাওলাদার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন বলেন, মিজান হাওলাদারকে বৃহস্পতিবার আদালতে নেওয়া হবে। উদ্ধার করা কঙ্কালটি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।

ঘটনার পর যাঁদের আসামি করা হয়েছিল, তাঁদের কারও নাম মিজান বলেননি জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ফোরকান বর্তমানে জামিন নিয়ে পলাতক। মাদকসংক্রান্ত বিরোধের কারণে খাইরুলকে খুন করা হয়। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত গিয়াস উদ্দিন এক বছর আগে মারা গেছেন।

শেয়ার করুন