শেষ ওভারে দারুণ ব্যাটিং করলেন ইয়াসির আলী রাব্বি। বরং, তার ব্যাটিং দেখে আফসোসই বাড়লো শুধু। এ ধরনের ব্যাটিং যদি আর ২-৩টা ওভারে করতে পারতো, তাহলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যেতো।
তবু, ইয়াসির রাব্বির শেষ ওভারে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ব্যবধানই কমেছে শুধু। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে হেরে শুরু হলো বাংলাদেশের।
শেষ ওভারে বল করতে আসেন হারিস রউফ। তার ওভার থেকে তিনটি বাউন্ডারি, একটি ছক্কা এবং একটি ডাবলসের মাধ্যমে মোট ২০ রান সংগ্রহ করে ইয়াসির আলী রাব্বি। আগের ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিম পরপর দুই বলে দুটি উইকেট নিয়ে বড় ধাক্কা দিলেও একটি বাউন্ডারি মেরে দেন ইয়াসির আলী রাব্বি।
শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমে যায় ২১ রান দুরে থাকতে, ১৪৬ রানে। ২১ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসির আলী রাব্বি। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
১৬৮ রান খুব বেশি বড় লক্ষ্য নয়। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে উইকেট ধরে রেখে রানের চাকা ঠিক রাখতে পারলে জয় সম্ভব। সে লক্ষ্য নিয়েই শুরুতে ব্যাট করছিলেন দুই মেকশিফট ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাব্বির রহমান।
দু’জনের জুটিতে ২৫রানও উঠে গিয়েছিল। কিন্তু মোহাম্মদ ওয়াসিমের বল পুল করতে গিয়ে ব্যাটের উপরের কানায় লাগিয়ে বল উপরে তুলে দিলেন মিরাজ। ডিপ স্কোয়ার লেগে বল চলে যায় আসিফ আলির হাতে। ১১ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
প্রায় একই ভুল করে আউট হলেন সাব্বির রহমানও। লিটন দাসের সঙ্গে তার জুটিটা বড় হলো না। মাত্র ১২ রানের। ৬ষ্ঠ ওভারের ৫ম বলে হারিস রউফের বলকে ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু এখানেও বল ব্যাটের উপরের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় এবং হারিস রউফ নিজেই সেই ক্যাচ তালুবন্দী করেন।
দুই ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাব্বির রহমান- ১২ রানের ব্যবধানে বিদায় নেয়ার পর জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন লিটন-আফিফ। দু’জনের ব্যাটে ৫০ রানের জুটিও গড়ে ওঠে। ২ উইকেটে ৩৭ রান থেকে ৮৭ রানে নিয়ে যান তারা দলীয় স্কোরকে।
২৬ বলে ৩৫ রান করেন লিটন দাস; কিন্তু এ সময়ই ঘটে বিপর্যয়। পাকিস্তানি স্লো বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজের পরপর দুই বলে উইকেট হারান লিটন দাস এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। হ্যটট্রিকের সুযোগ ছিল। তবে হ্যাটট্রিক না হলেও দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ বিপদে ফেলে দিয়েছেন নওয়াজ।
এরপর একপাশ আাগলে দারুণ খেলছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। কিন্তু হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলেন তিনিও। ২৩ বলে ২৫ রান করে শাহনাওয়াজ ধানির বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাট করতে পারেন। এ কারণে তারওপর প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু ৯ বল খেলে ৮ রান করে বিদায় নেন তিনিও। বোলার শাদাব খান এবং ক্যাচ নেন ইফতিখার আহমেদ।
১৯তম ওভারেও পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২ রান করে তাসকিন এবং পরের বলেই আউট হয়ে যান নাসুম আহমেদ। পাকিস্তানের হয়ে ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ২ উইকেট নেন মোহাম্মদ নওয়াজ এবং ১টি করে উইকেট নেন শাহনাওয়াজ ধানি, হারিস রউফ এবং শাদাব খান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ রিজওয়ানের অপরাজিত ৭৮ রানের ওপর ভর করে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। ৩১ রান করেন শান মাসুদ, ২২ রান করেন বাবর আজম এবং ১৩ রান করে ইফতিখার আহমেদ। তাসকিন নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ এবং হাসান মাহমুদ।