ক্রিমিয়া–রাশিয়া যোগাযোগের সেতু ধসে ইউক্রেনীয়দের উল্লাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিস্ফোরণের পর দুর্ঘটনাস্থল থেকে কালো ধোঁয়া উড়ছে। ছবি: এএফপি

ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ সেতুতে ধস হওয়ায় উল্লাসে মেতেছেন ইউক্রেনীয়রা। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহৎ মনোব্যাংক ইতিমধ্যে নতুন একটি ডেবিট কার্ড ইস্যু করেছে। কার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর ছবি দেওয়া হয়েছে। টুইটারেরও ধসে পড়া সেতুর ছবি শেয়ার করছেন অনেকে। খবর বিবিসির

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাঁরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব ওলেক্সি দানিলভও আছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৭০তম জন্মদিনের মাত্র এক দিন পর এই বিস্ফোরণ ঘটল। টুইটার পোস্টে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর ভিডিওর পাশে মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর ১৯৬২ সালের বিখ্যাত পরিবেশনা ‘শুভ জন্মদিন মি. প্রেসিডেন্ট’ ভিডিওটিও জুড়ে দিয়েছেন ওলেক্সি দানিলভ।

স্থানীয় সময় শনিবার (৮ অক্টোবর) সকালে ক্রিমিয়া থেকে সড়কপথে রাশিয়ায় যাওয়ার একমাত্র পথ কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে সেতুতে থাকা একটি তেলবাহী ট্রেনের সাতটি ট্যাংকারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে ধসে পড়ে সেতুতে গাড়ি চলাচলের দুটি লেন। এ ঘটনায় অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেনীয়দের মাধ্যমে সেতুতে বিস্ফোরণের বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। গত এপ্রিলে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা ডুবির সঙ্গে সেতু বিস্ফোরণকে তুলনা করা হচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সুসংবাদ পাচ্ছেন ইউক্রেনীয়রা। দেশটির সেনারা রুশ বাহিনী দখলে নেওয়া বিভিন্ন এলাকা পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় ধসে পড়া ও জ্বলন্ত কার্চ সেতু দেখে ইউক্রেনীয়দের মনোবল বাড়ছে। তাঁদের এই প্রতিক্রিয়াকে সন্ত্রাসী ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে দেখছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, আমরা জানতে পেরেছি সেতু ধসের ঘটনা নিয়ে ইউক্রেনীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করছেন। এ ছাড়া ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেতু ধসের ঘটনাকে গত এপ্রিলে কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা ডুবির সঙ্গে তুলনা করছে।

তিনি আরও বলেছেন, সেতু ধসের ঘটনা নিয়ে কিয়েভের প্রতিক্রিয়া একধরনের সন্ত্রাসী আচরণ।

ক্রিমিয়ায় নিযুক্ত রুশ প্রধান সেরগেই আকিসনভ স্থানীয় জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, ক্রিমিয়া উপদ্বীপে জ্বালানি ও খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে রাশিয়া। পরে একটি গণভোটের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার সঙ্গে অঙ্গীভূত করা হয়। এরপর যোগাযোগের জন্য এই সেতু তৈরি করা হয়। ২০১৮ সালে সেতুটি উদ্বোধন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের কাছে সামরিক রসদ পাঠানোর ক্ষেত্রে এই সেতু ব্যবহার করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন