ছেলেকে শিক্ষার্থী হিসেবে (স্টুডেন্ট ভিসায়) সাইপ্রাসে পাঠানোর জন্য দালালদের সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি করেছিলেন পটুয়াখালীর বাউফলের শফিকুল ইসলাম। চুক্তির চার লাখ টাকা দেওয়ার পর তার ছেলেও বিমানে চড়ে দেশ ছেড়েছিলেন। তবে সাইপ্রাস নয়, আরব আমিরাতে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল তৌহিদুল ইসলাম (২০) নামের ওই তরুণকে। সেখানে দুই মাস আটকে রেখে তাকে নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়।
গত ২৪ জুন তৌহিদুলকে আমিরাতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে সাইপ্রাসে পাঠাতে আরও টাকা চাওয়া হয়। তখন চুক্তির বাকি এক লাখ টাকা দেন শফিকুল ইসলাম। এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর তৌহিদুলকে নেওয়া হয় সাইপ্রাসের উত্তরাঞ্চলের একটি এলাকায়, যা টার্কিস রিপাবলিক নর্দার্ন সাইপ্রাস নামে পরিচিত। সেখান থেকে তৌহিদুলকে সাইপ্রাসে নিতে আবার টাকা দাবি করা হয় শফিকুল ইসলামের কাছে। একপর্যায়ে দুই দফায় আরও প্রায় চার লাখ (৩ লাখ ৯৫ হাজার) টাকা দেন শফিকুল ইসলাম। তারপরও তৌহিদুলকে জায়গামতো পাঠানো হয়নি। উপরন্তু তার মায়ের মুঠোফোনে তৌহিদুলকে চেয়ারে বসিয়ে হাত-পা ও চোখ বাঁধা ছবি পাঠানো হয়।
এরপর ২ অক্টোবর এই মানব পাচার চক্রের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করেন শফিকুল ইসলাম। এরপর মামলার ১ নম্বর আসামি ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলায় ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম।
শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেকে স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাসে পাঠানোর কথা বলে আরব আমিরাতে নিয়ে নির্যাতন করেছে। আগে আমি পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। মুক্তিপণের জন্য আমার কাছ থেকে আরও প্রায় চার লাখ টাকা আদায় করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল আলম বলেন, তৌহিদুলকে যারা বিদেশে নিয়ে নির্যাতন করেছে, তাদের প্রত্যেকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তৌহিদুলকে নির্যাতন ও মানব পাচারের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন লিয়াকত, মনির ও জাহাঙ্গীর। তারা সবাই পলাতক রয়েছেন।